হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলায় পরিকল্পিত পদক্ষেপের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে খেজুরের রস আহরণের ঐতিহ্য।
শীতের আগমনে খেজুর গুড়ের মিষ্টি রসের জন্য খ্যাত চুনারুঘাট উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় রস আহরণ ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করতেন গাছিরা। নভেম্বর মাসের প্রথম থেকেই শুরু হতো রস আহরণের প্রস্তুতি। নভেম্বর ছাড়াও পরবর্তী দুই মাস গাছিরা রস আহরণ ও গুড় তৈরি করতেন। শীতের বিকেলে খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহের জন্য মাটির পাত্র গাছে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখতেন গাছিরা। পরদিন ভোরে ওই রস সংগ্রহ করে গুড় তৈরি করা হতো।
সময়ের সাথে সাথে হারিয়ে যাওয়া এই রস-গুড়ের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন ভোক্তারা। সুপরিকল্পিত উদ্যোগ নেওয়ার মাধ্যমে খেজুরের রস ও গুড়কে লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে জানান খেজুরের রস সংরক্ষণকারী ও
গুড় উৎপাদনকারী একাধিক চাষি।
বিশুদ্ধ খেজুরের রস-গুড় উৎপাদনের লক্ষ্যে জেলায় গাছিদের সঙ্গে কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখলে এবং তাদেরকে পরামর্শ দিলে গাছিদের মাধ্যমে আধুনিক পদ্ধতিতে রস সংগ্রহ থেকে শুরু করে বিশুদ্ধ গুড় উৎপাদন করা যেত। কিন্তু সেসব বিষয়ে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে না বলে দাবি গাছিদের। এতে দেশে ও বিদেশে খেজুরের গুড়ের চাহিদা বেশি থাকা সত্ত্বেও হারিয়ে যাচ্ছে খেজুরের রস সংরক্ষণ ঐতিহ্য।
খেজুরের গুড় ও পাটালির চাহিদা দেশ-বিদেশে সর্বত্র রয়েছে। এক দশক আগেও এ অঞ্চলে প্রচুর খেজুরের গাছ ছিল। বর্তমানে আগের তুলনায় গাছ অনেকটা কমে গেছে। সরকারি উদ্যোগে নতুন করে খেজুরের চারা গাছ লাগানোর উদ্যোগ না নেওয়ায় গাছিরা হতাশা ব্যক্ত করেন। এক ভাড় খেজুরের রস ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকায় এবং ১ কেজি বিশুদ্ধ খেজুর গুড় ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে বলে তারা জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাহিদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাদের কৃষি অধিদপ্তরের অধীনে খেজুরের রস উৎপাদন বা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে না। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।
তিনি ইক্ষু গবেষণা ইনিস্টিউট চুনারুঘাট উপকেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
এ বিষয়ে জানতে ইক্ষু গবেষণা উপকেন্দ্র চুনারুঘাট শাখায় বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কেউ কল রিসিভ করেনি।