‘পছন্দের’ কর্মকর্তার সন্তানকে সুবিধা দিতে শাবিতে ভর্তির নীতিমালায় পরিবর্তন!

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকৃত এক কর্মকর্তার সন্তানকে স্নাতক ১ম বর্ষে ‘ভর্তি নিতে’ জরুরি একাডেমিক কাউন্সিল সভা আহ্বান করে নীতিমালায় পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে কর্তৃপক্ষ অভিযোগটি অস্বীকার করে বলছেন, ‘৯ বছর ধরে চলমান অপূর্ণাঙ্গ নীতিমালা পূর্ণাঙ্গ করা হয়েছে।’

জানা যায়, ২০১৪ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য ‘পৌষ্য কোটা’ নামে কোটা চালু করে প্রশাসন। সেই নীতিমালা অনুযায়ী, ভর্তি পরীক্ষায় মোট নম্বরের ন্যূনতম শতকরা ৪০ ভাগ নম্বর পেয়ে একজন পৌষ্য প্রার্থী ভর্তি হতে পারবেন।  ‍চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকৃত কারো সন্তান এ কোটায় অন্তর্ভুক্ত হবেন না। তবে এ বছর ভর্তি পরীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের আস্থাভাজন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকৃত এক কর্মকর্তার সন্তান সেই শর্ত পূরণ করতে পারেন নি। যারফলে চূড়ান্ত ভর্তির পূর্বে জরুরি একাডেমিক কাউন্সিল সভা আহ্বান করে নীতিমালা পরিবর্তন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা।

তারা বলেন, ‘বর্তমান নীতিমালা অনুযায়ী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবসরোত্তর পাঁচ বছর পর্যন্ত ও মরণোত্তর চাকুরীর সময়সীমা পর্যন্ত তাদের সন্তানরা পৌষ্য কোটায় ভর্তি হতে পারবেন। যা আগে ছিলো না। এছাড়া পূর্বের নীতিমালা অনুযায়ী, ভর্তি পরীক্ষায় পাস করার পাশাপাশি বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতার শর্ত পূরণ করতে হবে। তবে বর্তমান নীতি অনুযায়ী, পরীক্ষায় পাস করার পাশাপাশি কোটায় ভর্তির জন্য প্রতি বিভাগে সর্বশেষ ভর্তিকৃত প্রার্থীর প্রাপ্ত নম্বর থেকে কোটা প্রার্থীর সর্বোচ্চ ১০ নম্বর কম পেয়ে ভর্তি হতে পারবেন। যা এক প্রকার বৈষম্য বলে দাবি করেছেন একাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তারা।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, ‘কোটা সুবিধা হ্রাসের জন্য সরকার নানা উদ্যোগ নিচ্ছে, অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটার ব্যাপ্তি বাড়ানো হচ্ছে। যা খুবই দুঃখজনক। এর দ্বারা প্রমাণিত হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সন্তানরা মেধাবী না হয়েও অধিক সুবিধা পাচ্ছেন। যা সম্পূর্ণ অনৈতিক।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ফজলুর রহমান সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘এ নীতি এতদিন পূর্ণাঙ্গ ছিল না। এবছর কর্তৃপক্ষ মনে করেছে এ বিষয়গুলো ‘ওপেন’ করতে। যাতে কাজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয়। তাই এখন এ নীতি পূর্ণাঙ্গ করা হয়েছে।’ এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের মুঠোফোনে কল দিলে কোনো সাড়া পাওয়া যায় নি।