সিলেট-৩ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল। তবে মনোনয়ন পাননি তিনি। তার জায়গায় বর্তমান সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানেই আস্থ রেখেছে দলের মনোনয়ন বোর্ড। তবে দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় প্রার্থীদের স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচনে বিধি নিষেধ তুলে দিলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে নামেন ডা. দুলাল।
প্রতী বরাদ্ধের বহু আগে থেকেই তৃণমূল কর্মীদের একাংশকে সাথে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন তিনি। তবে সম্প্রতি তার নেতাকর্মীদের হুমকি, প্রচারণায় বাধা, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলাসহ একাধিক অভিযোগ তুলেছেন ট্রাক মার্কার এই প্রার্থী। আর অবিয়োগের তীর সিলেট-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী হাবিবের দিকে।
ডা. দুলাল বলেন, নৌকার কর্মী সমর্থকরা আমার ট্রাক প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণায় নানাভাবে বাধা দিচ্ছে। পোস্টার সাঁটানো, লিফলেট বিতরণ ও নির্বাচনী কমিটি গঠনে তারা নানাভাবে বাধা দিচ্ছে। আমার কর্মী সমর্থকদের হুমকি দিচ্ছে।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেটের একটি অভিজাত পার্টি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন দুলাল।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ডা. দুলাল বলেন, প্রতীক বরাদ্দ ও প্রচারণা শুরুর পর সিলেট-৩ আসনের সর্বস্তরের মানুষ যে অকুন্ঠ সমর্থন দিচ্ছেন, তাতে আমি অভিভূত। তারা আমাকে সমর্থন দিচ্ছেন এবং ট্রাক প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করতে চাইছেন। কিন্তু আমার প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকার প্রার্থীর লোকজন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে অবজ্ঞা করে আমার কর্মীদের সাথে হিংসাত্মক আচরণ করছেন। তারা আমার পোস্টার, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলছেন। আমার কর্মীদের নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন। উপ-নির্বাচনে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত দলের নেতাকর্মীদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে ভীতসন্ত্রস্ত করছেন। নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরেই আমার কর্মীদের পেছনে তার কর্মীদের লেলিয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, গত ২৩ ডিসেম্বর বালাগঞ্জের পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়ন থেকে আমার অফিস উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আসার পথে গাড়ি থেকে আমার কর্মীদের নামিয়ে দেয় স্থানীয় দুই ইউপি সদস্য। তারা তাদের আমার পক্ষে কাজ না করতে হুমকি দেয়। একই দিনে ফেঞ্চুগঞ্জের উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়নের পাঠানচক গ্রামে আমার ব্যানার লাগাতে দেয়নি নৌকার কর্মীরা। ঘিলাছড়া ইউনিয়নের মোকামেরতল বাজারে আমার নির্বাচনী কার্যালয়ে ঢুকে পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে। জালালপুরে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও নৌকার প্রার্থীর বিশ্বস্ত হিসেবে পরিচিত মীর মতিউর রহমান আমার কর্মীদের প্রকাশ্যে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, এসব ঘটনা আমি রিটার্নিং অফিসার ও সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের লিখিতভাবে জানিয়েছি। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। নৌকা প্রার্থী ও তার কর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছেন।
তিনি আরও বলেন, সিলেট-৩ আসনকে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং সবক্ষেত্রে সমৃদ্ধ নির্বাচনী এলাকায় রূপান্তরিত করাই হবে আমার লক্ষ্য। তবে নৌকার কর্মী সমর্থকরা সার্বিক নির্বাচনী পরিবেশ বিনষ্টের কারণে ও তার ট্রাক প্রতীকের ভোটারদেরকে ভোটকেন্দ্রে না আসতে ভিতি প্রদর্শনের কারণে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।