সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে স্বামীসহ পরিবারের লোকজনের ‘নির্যাতনে আহত’ এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২৮ আগস্ট) বিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তার স্বামীকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্বজনরা।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ৮ বছর আগে দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের ফুলকারগাঁও গ্রামের মৃত আবদুল গফুরের পুত্র সুলতান মিয়ার সাথে ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের বাউভোগলী গ্রামের মৃত আছদ্দর আলীর মেয়ে সাজনা বেগমের (৪২) বিয়ে হয়। তাদের পরিবারে রয়েছে তিন সন্তান। বিয়ের পর থেকে সাজনাকে নির্যাতন করে আসছিলেন স্বামীসহ তার পরিবারের লোকজন। স্ত্রী যৌতুকের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় স্বামীর সঙ্গে তার ঝগড়া লেগেই থাকত। তারপরও স্বামীর বাড়ির লোকজনের নির্যাতন সহ্য করে আসছিলেন ওই গৃহবধূ।
সর্বশেষ গত বুধবার রাতে পিতার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে গৃহবধূকে চাপ দেন তার স্বামী। এক পর্যায়ে স্ত্রী অপারগতা প্রকাশ করলে তার ওপর পরিবারের লোকজন মিলে চালান নির্যাতন। এতে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হন ওই গৃহবধূ। ওইদিন তাকে ছাতক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। রোববার সকালে অপারেশন শেষে তাকে উইমেন্স মেডিকেলের আইসিইউ-তে রেফার করা হলে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ওই গৃহবধূ।
এদিকে, স্ত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বামী সুলতান মিয়াকে হাসপাতাল থেকে আটক করে সিলেট কোতয়ালী থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছেন সাজনা বেগমের স্বজনরা।
এ ঘটনায় দোয়ারাবাজার থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন সাজনার ভাই আছলম আলী।
দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবদুলাল ধর বলেন, এমন ঘটনা শুনে থানা থেকে উপ-পরিদর্শক মিজানুর রহমানকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। রোববার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।