ঢাকায় সফররত যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক-নির্বাচনী প্রতিনিধি দলের তিন সদস্যের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বৈঠকে নির্বাচন নিয়ে কথা হয়নি বলে জানিয়েছেন দলটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমদ। শাম্মী আহমদ জানান, বৈঠকে বাংলাদেশের ফরেন পলিসি এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই উপমহাদেশের যে রাজনৈতিক টানাপোড়েন, যা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও যাচ্ছে এসব বিষয়ে বাংলাদেশের কী ভূমিকা, আওয়ামী লীগ কী চিন্তা করছে- এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল। আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমদ বলেন, বিভিন্ন বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা হলেও আসন্ন নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়নি। তারা কোনো প্রশ্ন করেনি এবং আমরাও কোনো উত্তর দেইনি।
ড. শাম্মী আহমদ বলেন, মার্কিন প্রাক-নির্বাচনী প্রতিনিধি দল জানতে চেয়েছে ইন্ডিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক কেমন? চায়নার সঙ্গে কেমন? উপমহাদেশের যে দেশগুলো আছে তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কেমন? আমরা আমাদের বিষয়গুলো জানিয়েছি। বাংলাদেশে পররাষ্ট্রনীতি, আমাদের জাতির পিতা যেটা দিয়ে গেছেন, সকলের সাথে বন্ধুত্ব-কারো সাথে বৈরিতা নয়, সেটাই ফোকাস করা হয়েছে।
‘চায়না এবং বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে তারা জানতে চেয়েছে। তারা নিজেরাও স্বীকার করেছে, চায়না একটি ইকোনমিক পাওয়ার। চায়না আমাদের অর্থনৈতিক পার্টনার। তারা জানতে চাচ্ছে, ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক কেমন। আমরা জানিয়েছি, ইন্ডিয়া আমাদের পরীক্ষিত বন্ধু। আমাদের দুর্দিনে ’৭১ সালে ভারত যেভাবে আমাদের পাশে ছিল, সেটাকে আমরা সম্মানের চোখেই দেখি।’
তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার আমাদের ওপর ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা চাপিয়ে দিয়েছে। তারপরও আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছি। শুধু আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ নয়, গ্লোবাল ভিলেজে আমরা আলোচনার মাধ্যমে সবগুলো সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করি। অন্য কোনোভাবে আমরা করি না। পররাষ্ট্রনীতিকে আমরা ফলো করি। এই বিষয় নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক বলেন, তাদের আগ্রহ ছিল ইন্দো-চায়না রিলেশন নিয়ে। ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়েও একটা ব্যাপার ছিল, একইসঙ্গে ইউরোপ, আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের এ নেত্রী বলেন, ভারতের হিন্দুত্ববাদ জাগরণ নিয়ে তারা একটা প্রশ্ন করেছে। আমরা উত্তর দিয়েছি, আমরা কারো ইন্টারনাল বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না। আমরা কারো ইন্টারন্যাল ব্যাপারে কথা বলি না। আমার অন্য দেশের মতবাদকে সম্মান দিই। ইন্ডিয়াতে কি হচ্ছে না হচ্ছে, চায়নাতে কি হচ্ছে না হচ্ছে– এটা তাদের দেশের জনগণের বিষয়। আমাদের দেখার বিষয় নয়।
এর আগে বিকেল ৪টার দিকে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ে পৌঁছালে প্রতিনিধিদলকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব) মোহাম্মদ ফারুক খান।
প্রতিনিধিদলে ছিলেন- ইউএস ইনস্টিটিউট ফর পিসের (ইউএসআইপি) প্রতিনিধি জেফরি ম্যাগডোনাল্ড, ডেন মার্কি ও ইশা গুপ্তা। এছাড়া আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. ইনাম আহমেদসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।