মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে নিজের বুদ্ধিমত্তায় ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) হস্তক্ষেপে বাল্যবিয়ের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে ১৬ বছর বয়সী তানজিনা আক্তার রিয়া। সে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ইছবপুর রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী এবং জাগছড়া চা-বাগানের সেলিম মিয়ার মেয়ে।
জানা গেছে, সেলিম মিয়া কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নরিতলা গ্রামে এক ছেলের সাথে তার মেয়ে তানজিনার বিয়ে ঠিক করেন। বুধবার (১৮ জানুয়ারি) এই বিয়ের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তানজিনা এ বিয়েতে রাজি ছিল না। গত রোববার (১৫ জানুয়ারি) তানজিনা তার পরিচিত কম্প্যাশন বাংলাদেশ নামে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় কর্মরত রাইমুন বিশ্বাস নামে এক সমাজকর্মীর কাছে গোপনে মোবাইল ফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে সহায়তা কামনা করে।
তানজিনা কম্প্যাশন বাংলাদেশ নামে ওই সংস্থার সদস্য হওয়ায় লেখাপড়া ও স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন বিষয়ে সুবিধা পেয়ে আসছিল।
ওই সংস্থা থেকে বিষয়টি শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করলে সোমবার (১৬ জানুয়ারি) শ্রীমঙ্গল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) সদ্বীপ তালুকদার, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. লিটন আহমেদ ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান মিতালী দত্ত জাগছড়া চা-বাগানে মেয়েটির বাড়িতে যান।
এ সময় কম্প্যাশন এর প্রজেক্ট ম্যানেজার লুকাস রঙসাই, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আলোয় আলো ও ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স এর প্রকল্প কর্মকর্তা মো. রুবাইয়াৎ ফেরদৌস এবং রাইমুন বিশ্বাস উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় কর্মকর্তারা তানজিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে তানজিনার বাল্যবিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত হন এবং তানজিনার বাবা সেলিম মিয়াকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন, মেয়েটি প্রাপ্তবয়স্ক বা ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবে না এমন মুচলেকা নিয়ে মেয়েটির বাবা সেলিম মিয়াকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এখন আর মেয়েটির অভিভাবক প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত মেয়েটির বিয়ে দিতে পারবেন না।