সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানাধীন নাজিরবাজারে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মালবাহী ট্রাক ও শ্রমিকবাহি পিকআপের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা ১৪ জনে গিয়ে পৌছেছে।
বুধবার (০৭ জুন) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই ১১জন মারা যান।
খবর পেয়ে ফায়ারসার্ভিস ও দক্ষিণসুরমা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আহত ১২ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে সেখানে আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত বাকি ৯ জন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন, সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের মৃত সজিব আলীর ছেলে রশিদ আলী (২৫), শান্তিগঞ্জ উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের মৃত হারুন মিয়ার ছেলে দুলাম মিয়া (২৬), একই উপজেলার বাবনগাঁ গ্রামের মৃত ওয়াহাব আলীর ছেলে শাহিন মিয়া (৪০), দিরাই উপজেলার আলীনগর গ্রামের মৃত শিশু মিয়ার ছেলে হারিস মিয়া (৬৫), হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার হলদিউড়া গ্রামের আব্দুর রহিমের স্ত্রী আমিনা বেগম (৪৫), সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের মৃত মফিজ মিয়ার ছেলে সায়েদ নূর (৫০), শান্তিগঞ্জ উপজেলার তলেরতন গ্রামের মৃত আওলাদ উল্লার ছেলে আওলাদ হোসেন (৬০), দিরাই উপজেলার পাথারিয়া গ্রামের মৃত ছলিম উদ্দিনের ছেলে একলিম মিয়া (৫৫), গচিয়া গ্রামের বারিক উল্লার ছেলে সিজিল মিয়া (৫৫), ভাটিপাড়া গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে সৌরভ মিয়া (২৭), নেত্রকোনার ভারহাট্টা উপজেলার দশদার গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের ছেলে আওলাদ মিয়া (৩০), সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের শমসের নুরের মেয়ে মেহের (২৪), দিরাই উপজেলার মধুপুর গ্রামের সোনা মিয়ার ছেলে দুদু মিয়া (৪০), একই গ্রামের শাহজাহানের ছেলে বাদশা (২২) সহ ১৪ জন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শামসুদ্দোহা।
ফায়ার সার্ভিস সিলেটের উপ পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান জানান, মালবাহী একটি ট্রাক সিলেটের দিকে আসার পথে বিপরিত দিক থেকে আসা একটি পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরে জেলা প্রশাসক দুর্ঘটনায় নিহত প্রতি পরিবারকে ২০ হাজার ও আহতদের ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করেন।
এর আগে দুর্ঘটনার পর বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। এতে দুর্ঘটনাস্থলের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। সকাল ৮টার দিকে পুলিশি তৎপরতায় যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিকে দুর্ঘটনার পর নিহত ও আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে সেখানে স্বজনদের আহাজারিতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
এসময় স্বজনরা জানান, নিহত সবাই দৈনিক মজুরিভিত্তিক রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। আজ ভোরে সবাই একটি পিকআপে করে সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলায় একটি বাসায় ছাদ ঢালাইয়ের কাজে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যেই তারা দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান।