ধোঁয়াশা কাটছে, ফের মেয়র প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত আরিফের!

সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কোন পথে হাঁটছেন বিএনপিদলীয় বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী তা এখনো রহস্যঘেরা! অথচ এখন পর্যন্ত তাঁকে নিয়েই নির্বাচনী সব সমীকরণ। যদিও তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা নির্বাচনে আরিফকেই চান। আর সবার অংশগ্রহণে ভোট উৎসব চান সাধারণ ভোটাররা।

তবে কি তৃণমূল বিএনপি ও সমর্থকদের ডাকে সাড়া দিচ্ছেন আরিফুল হক চৌধুরী; সরাসরি এমন প্রশ্নের উত্তর পাওয়া না গেলেও এবার নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দিলেন বর্তমান মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী।

সোমবার (১ মে) দুপুরে নগরের রেজিস্টারি মাঠে মে দিবসের এক সমাবেশে এমন ইঙ্গিত দেন তিনি।

এসময় আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে আগামী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। তবে সিলেটের প্রেক্ষাপটে আমরা (বিএনপি) নির্বাচনে যাবো।’

একইসাথে তিনি বলেন, ‘কেনো আমরা সিলেট সিটি করপোরেশনে অংশগ্রহণ করবো সে বিষয়ে আগামী ২০ মে রেজিস্টারি মাঠে সমাবেশ করে এর ব্যাখ্যা ও কারণ জানাবো।’

এদিকে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইঙ্গিত দিলেও ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ নিয়ে সমালোচনা করেন। এমনকি নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত সরকারের প্রহসন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, ‘ইভিএম দিয়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিকে অনির্বাচিত করার সুযোগ রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইভিএম তাদের (আওয়ামী লীগের) মেকানিজমের অন্যতম একটা বিষয়, যারা তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিলেও, সে ভোট অন্য প্রার্থীর হয়ে যাবে।’

আরিফুল হক চৌধুরী আরও অভিযোগ করেন, সিলেটের দীর্ঘদিনের সম্প্রীতি নষ্ট করতে প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল করা হচ্ছে। আধ্যাত্মিক নগরে এমন অপচেষ্টা জনগণ রুখে দেবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এর আগে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখর সিলেট নগরীর অলিগলি রাজপথ। নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল ও ইসলামি আন্দোলনের মাওলানা মাহমুদুল হাসান সহ আরও কয়েকজন।

তবে, দলের বিদ্রোহী মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিএনপি।

দলের প্রার্থিতা নিয়ে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘দলীয় সিদ্ধান্ত হচ্ছে দলের প্রতীক নিয়ে না দলের কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহন করবে না। এই সিদ্ধান্তেই দল অটল। আমরা চেষ্টা করবো আমাদের দলের কেউ যেন নির্বাচনে অংশগ্রহন না করে।’

নির্বাচন না করার ব্যাপারে মেয়র এবং কাউন্সিলর পদে দলের একই সিদ্ধান্ত বলে জানান তিনি।

অপরদিকে দলীয় প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিতে ঐক্যবদ্ধ রয়েছে আওয়ামী লীগ। সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দলের প্রার্থীর বিজয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি। তবে পুরোদমে মাঠে নামতে এখনও সপ্তাহখানেক সময় লাগবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি বিএনপিও নির্বাচন করবে। যদি বিএনপি নির্বাচনে না আসে সেটা তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। তবে আমরা প্রতিপক্ষ সামনে নিয়েই মাঠে কাজ করে যাচ্ছি।’

এদিকে, জাতীয় নির্বাচনের আগে, বিএনপির স্থানীয় নির্বাচনে আসা উচিৎ; এমনটাই মত নাগরিক প্রতিনিধিদের।

সম্মিলিত নাগরীক উদ্যোগের সদস্য সচিব আহমেদ নূর বলেন, অন্তত এই নির্বাচনে বিএনপির যাওয়া উচিৎ। এটা বিএনপি ট্রামকার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। একইভাবে নিজেদের স্বচ্ছতা প্রমাণে সরকারদলের জন্যও এটা একটা সুযোগ বলে মনে করেন তিনি।

তবে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি ও ভোটারদের আস্থা অর্জনে নির্বাচন কমিশনকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে; মত বিশিষ্টজনদের।