ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ৭ স্থানে ধ্বস, ঝুঁকিপূর্ণ ৫টি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে টানা কয়েকদিনের বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ধলাই নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রোববার রাতে প্রতিরক্ষা বাঁধের ৭টি স্থানে ফাটল ও মাটি ধ্বস দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা বাঁধ রক্ষায় রাত জেগে স্বেচ্ছাশ্রমে গাছ ও মাটিভর্তি বস্তা ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করেন।

অপরদিকে পাহাড়ি ঢলের পানিতে রোববার রাতে উপজেলার পতনঊষার এলাকায় লাঘাটা ছড়ার বাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করে দুই গ্রামের প্রায় দেড় শতাধিক পরিবার পানিবন্ধি হয়ে পড়ে। সময়মতো ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামত না করায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফলতিকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা।

সোমবার (২০ জুন) সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর, খুশালপুর, মুন্সীবাজারের সুরানন্দপুর, পৌর এলাকার দক্ষিণ কুমড়াকাপন, রামপাশা, করিমপুর ও আলেপুর, মাধবপুর ইউনিয়নের হিরামতি ও আদমপুরের ঘোড়ামারা এলাকায় রোববার রাতে প্রতিরক্ষা বাঁধে ব্যাপক ধ্বস ও ফাটল দেখা দেয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ফলে ওইসব এলাকার বাসিন্দারা নির্ঘুম রাত আতিবাহিত করছেন। কিছু এলাকায় মানুষজন বাঁধে মাটি ও বস্তা দিয়ে বাঁধ রক্ষায় চেষ্টা করছেন।

অপরদিকে উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের লাঘাটা ছড়ার বাঁধ ভেঙে গোপীনগর এলাকায় পানি প্রবেশ করে দেড়শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। ঢলের পানিতে আউশ ক্ষেত তলিয়ে গেছে। খবর পেয়ে রোববার রাতে ও সোমবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত উদ্দীন, উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রামভজন কৈরী, সহকারি কমিশনার (ভূমি) সোমাইয়া আক্তারসহ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধগুলো পরিদর্শন করেন।

কমলগঞ্জ পৌর এলাকার করিমপুর গ্রামের এরশাদ মিয়া, মদরিস আলী ও রাজু উদ্দিন বলেন, নদীর ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধে আংশিক কাজ করে ফেলে রাখায় ধ্বসে পড়ছে। সময়মতো পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হতো না।

পতনউষারের গোপিনগর এলাকার পানিবন্দি হাসিনা বেগম, সাতির মিয়া ও আব্দুল মন্নান বলেন, রোববার রাতে বাঁধ ভেঙে পানি চলে আসে আমাদের বাড়ীঘর ও রাস্তাঘাটে। ঘরে পানি উঠায় পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছি।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত উদ্দীন বলেন, ইতিমধ্যে উপজেলায় ৮টি অস্থায়ী বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পানিবন্দি পরিবারগুলোর মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন- ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থান দ্রুত মেরামতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

ধলাই নদীর ১১টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ স্বীকার করে মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, দ্রুত বাঁধগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ধলাই নদীর বাঁধ মেরামতে বড় ধরনের একটি প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। এখানে আমাদের কোন গাফলতি নেই।