সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় সোহেল আহমেদ নামে এক ফটোস্ট্যাট ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে নিজের স্ত্রী হেনা আক্তারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন সড়কে হেনা আক্তারের পরিবারের লোকজন কর্তৃক আয়োজিত মানববন্ধনে এমন অভিযোগ করা হয়।
এর আগে গত ১৪ নভেম্বর হেনার বড় ভাই মো. অলিউল্লাহ সোহেল, সোহেলের ছোট ভাই কবির আহমেদ ও তাদের মা আছিয়া আক্তারকে অভিযুক্ত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
সোহেল সদর ইউনিয়নের বাহুটিয়া গ্রামের শাহেদ আলীর ছেলে। ২০২০ সালের ২২ সেপ্টেম্বর সোহেলের সাথে একই উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের শফি মিয়ার মেয়ে হেনা আক্তারের বিয়ে হয়।
মানববন্ধনে অভিযোগ করা হয়, বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য হেনা আক্তারের ওপর বিভিন্নভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চলে আসছিল। গত ২০ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১টার দিকে হেনাকে যৌতুকের জন্য অমানবিক নির্যাতন করে এবং জোরপূর্বক হেনার মুখে বিষ ঢেলে দেয় অভিযুক্তরা। পরে ওই রাতেই সাড়ে ৩টার দিকে হেনাকে মোহনগঞ্জ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে রাতেই তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ২১ অক্টোবর দুপুর দুইটার দিকে হেনাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। কিন্তু ওইদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হেনাকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করে।
মানববন্ধনে হেনার বড় বোন নূরজাহান বেগম তার বক্তব্যে বলেন, ‘থানায় মামলা না নেওয়ার কারণে আমরা পরে আদালতে মামলা করি। আদালতের নির্দেশ থাকায় পরবর্তীতে থানায় মামলা রুজু হয়। কিন্তু এখনও আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করানো এবং আমাদেরকে সঠিক সময়ে খবর না জানানোর কারণে আমার বোনের মৃত্যু হয়েছে। তাই দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সোহেল আহমেদ বলেন, ‘আমি ও আমার পরিবারের লোকজনের ওপর আনা অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমার স্ত্রীর খিঁচুনি হয়েছিল। এছাড়া সে (হেনা) ডায়াবেটিকসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিল। যার কাগজপত্র আমার কাছে রয়েছে। আমি মনে করি হেনার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।’
ধর্মপাশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শেখ আলী ফরিদ আহমদ বলেন, ‘এ ব্যাপারে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’