ধরপাকড়-তল্লাশিতে সিলেট মহানগর বিএনপির নিন্দা

কোনো উস্কানি ছাড়াই সিলেটজুড়ে বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার, বাসা-বাড়ি, দোকান-ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পুলিশি তল্লাশির নামে হয়রানির অভিযোগ এনে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন সিলেট মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ।

অবিলম্বে আটককৃত নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি, গ্রেপ্তার-নির্যাতন ও পুলিশি তল্লাশির নামে হয়রানি বন্ধ করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

এক বিবৃতিকে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, কোনো ধরনের উস্কানি ছাড়াই গত মঙ্গলবার নগরীতে ছাত্রদলের একটি মিছিলে পুলিশ হামলা চালিয়ে ৮ জন দলীয় নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সিলেটের রাজনৈতিক ময়দানকে উত্তপ্ত করার ষড়যন্ত্র শুরু করে। এরপর থেকে নগরজুড়ে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে পুলিশ। রাতের আঁধারে পুলিশি তল্লাশির নামে দলীয় নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে ব্যাপক তাণ্ডব চালানো হচ্ছে। সিলেটের রাজনৈতিক ময়দানকে উত্তপ্ত করার পরিণতি কারও জন্য মঙ্গলজনক হবে না।

তারা বলেন, গত বুধবার দিবাগত রাতে সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক প্রচার সম্পাদক শামীম মজুমদার, ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ২৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. বদরুল ইসলাম, সদর যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আলীমুর, ছাত্রদল নেতা ইমন, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক মীর্জা হাবিব ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এম এ লাহিনকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপরদিকে একই দিনে ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নাজিম উদ্দিন, ২০ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লোকমানুজ্জামান ও ২৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ আহমদসহ অনেক দলীয় নেতাকর্মীর বাসা-বাড়িতে পুলিশি তল্লাশির নামে হয়রানি করা হয়েছে।

তারা আরও বলেন, ২৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ডা. বদরুল ইসলামকে বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ৮টায় দক্ষিণ সুরমার খোজারখলাস্থ নিজ ফার্মেসি থেকে সাদা পোশাকধারী পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কিন্তু গ্রেপ্তারের পর থেকে পুলিশ আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে আসছিল। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ২০২২ সালের একটি পুরনো মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কোর্টে চালান করা হয়। এদিকে নেতাকর্মীদের না পেয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণ করা হচ্ছে। অথচ এসব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো মামলা নেই। পুরনো রাজনৈতিক সকল মামলায় জামিনে থাকার পরও তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বাসা-বাড়ি তল্লাশির নামে তাণ্ডব চলছে। শুধু তাই নয়, বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের পর আটকের বিষয়টি অস্বীকার করে কয়েক ঘণ্টা পর তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। এতে আটক নেতাকর্মীদের পরিবারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সরকারের দলীয় লাঠিয়াল বাহিনীর মতো আচরণ করছে। এতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে। অবিলম্বে আটককৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি দিন। ধরপাকড়, গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও বাসা-বাড়িতে তল্লাশির নামে হয়রানি বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি। হামলা-মামলা-নির্যাতন চালিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমিয়ে রাখা যাবে না।