দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি : ব্রয়লার মুরগির দামে নতুন রেকর্ড

বাজারে রেকর্ড ছাড়িয়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। কয়েক সপ্তাহ ধরে এই মুরগির দাম দফায় দফায় বেড়ে ২৫০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, এই মুরগির দাম আগে কখনও এতটা বাড়েনি। এবার তা রেকর্ড ছাড়িয়েছে।

ব্রয়লারের দাম বাড়ায় রীতিমতো দিশেহারা ক্রেতারা। অনেককেই চাহিদার বিপরীতে কম পরিমাণে মাংস কিনতে দেখা গেছে। আমিষের চাহিদা পূরণের সহজলভ্য এই খাবার কেনা অনেকটাই দুরুহ হয়ে উঠছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, মাত্রাতিরিক্ত দাম বাড়ায় খুচরা পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগি বিক্রিতে ভাটা পড়েছে। এ অবস্থায় বাজার মনিটরিং করে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার দাবি ক্রেতা-বিক্রেতা সবার।

দেশের বাজারে এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। আর সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৪০ টাকা কেজি দরে।

ব্যবসায়ীরা জানান, গত সপ্তাহে দাম কমে ২৩০ টাকা কেজিতে ব্রয়লার বিক্রি হলেও সংকট থাকায় খামার পর্যায়ে আবারও বেড়ে গেছে দাম। সারা বাংলাদেশেই মুরগি নেই। এটা হলো আসল কথা। তারা খামারিদের কাছ থেকে কম দামে কিনতে পারেন না। যেমন দামে কেনেন, তেমন দামে বেচেন।

টিসিবির তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির কেজি এক সপ্তাহ আগেও ছিল ২০৫ থেকে ২২০ টাকা। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে সপ্তাহের ব্যবধানে ২৫০ গিয়ে ঠেকেছে। এক মাসে আগে অর্থাৎ গত ৩ ফেব্রুয়ারি ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৭০ থেকে ১৮৫ টাকা। দাম বেড়েছে ২৩.৯৪ শতাংশ। ঠিক এক বছর আগে অর্থাৎ ২০২২ সালের ৩ মার্চ ব্রয়লার মুরগির প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। ওই হিসাবে এক বছরে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ৪১.৯৪ শতাংশ।

ওয়ার্ল্ড পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশনের বাংলাদেশ চ্যাপ্টার জানায়, গত জানুয়ারির শুরু থেকে বাজারে সংকট তৈরি হয়েছে। যা কাটিয়ে উঠতে দুই মাসের মতো সময় লাগবে।

এদিকে মুরগির দামের এ বৃদ্ধিকে অস্বাভাবিক বলছেন খোদ বিক্রেতারাও। এক বিক্রেতা বলেন, মুরগির দাম অতিরিক্ত বেশি, যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। কিন্তু হঠাৎ কেন এমন অসহনীয় হয়ে উঠল বাজার? সর্বোচ্চ কত টাকা হতে পারে এক কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম?

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেন, এত বাড়ার কথা নয়। কেন মুরগির দাম এত বেশি বাড়বে? কেন আড়াইশ টাকা কেজি হবে? আমাদের উৎপাদন খরচ সমন্বয় করে ব্রয়লার মুরগির সর্বোচ্চ বাজার দর হওয়া উচিত ২০০ টাকা কেজি।

বাজার সহনীয় রাখতে খুচরা বাজারের পাশাপাশি আমদানি পর্যায়ে দাম মনিটরিংয়ে জোর দেয়ার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।