আবারও ব্যর্থ হলো চা শ্রমিক, বাগান মালিক ও শ্রম অধিদপ্তরের ত্রিপাক্ষিক বৈঠক। দীর্ঘ ৫ ঘণ্টার বৈঠকে ফলপ্রসূ কোন সমাধান না আসায় মজুরী বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন চা শ্রমিক নেতারা।
একাধিক শ্রমিক নেতা সিলেট ভয়েসকে জানিয়েছেন, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী এনডিসির মধ্যস্থতার মাঝেও যেহেতু দাবী মেনে নেননি চা বাগান মালিকরা, এ অবস্থায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া ছাড়া কোন পথ খোলা নেই। তবে, আন্দোলন চলবে, আলোচনাও চলবে।
বুধবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে চা বাগান মালিক ও চা শ্রমিকদের নিয়ে ঢাকায় দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে বসে শ্রম অধিদপ্তর। দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা ত্রিপাক্ষিক আলোচনা শেষে রাত ১১টার দিকে শেষ হয় এই বৈঠক। পুরো বৈঠকে নিজেদের ৩০০টাকা মজুরির দাবিতে অনড় ছিলেন চা শ্রমিক নেতারা।
বৈঠকের বিষয়ে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি পঙ্কজ কন্দ জানান, বৈঠকে বাগান মালিকরা আবারও আন্দোলন স্থগিত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু তা মেনে নেয়ার মত পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। বৈঠকে চা শ্রমিকদের একটাই মূল দাবী ছিল- ৩০০টাকা মজুরী। এর প্রেক্ষিতে মালিকপক্ষ যা দিতে চেয়েছে তা বলার মতো না। তাই বাধ্য হয়েই আন্দোলন চালিয়ে যেতে হচ্ছে।
এদিকে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালী সভাপতি রাজু গোয়ালা জানান, ‘আমাদের দাবী মেনে নেয়নি বাগান মালিকপক্ষ। এ অবস্থায় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া ছাড়া কোন পথ খোলা নেই। তবে, আন্দোলন চলবে, পাশাপাশি সরকার চাইলে আলোচনাও চলবে।’
এর আগে মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলেও শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী এনডিসি সাথে চা শ্রমিক নেতাদের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যা দিনশেষে ব্যর্থতায় রূপ নেয়। তখন দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন শ্রমিক নেতারা।
যার অংশ হিসেবে বুধবার বেলা ১১টায় লাক্কাতুরা চা বাগান এলাকায় এসে জড় হন। সেখানে প্রায় তিন ঘন্টা অবস্থান কর্মসূচির পাশাপাশি বিক্ষোভ মিছিল করে চা শ্রমিকরা। উপস্থিত চা শ্রমিকদের একটাই ছিল দাবী ৩০০ টাকা মজুরি। পাশাপাশি তারা তাদের বঞ্চনার নানা কথা তুলে ধরেন।
শুধু তাই নয়, শ্রম অধিদপ্তরের সাথে বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন চা শ্রমিক নেতারা। বৈঠকের বামে সময়ক্ষেপণকে তারা প্রহসন বলেও উল্লেখ করেন।
প্রসঙ্গত, টানা চারদিন ২ ঘন্টা করে কর্মবিরতি পালন শেষে, শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেন শ্রমিকরা। শোক দিবস উপলক্ষে রবি ও সোমবার কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়।
মঙ্গলবার সকাল থেকে পুনরায় লাগাতার কর্মবিরতি পালন করছেন তারা। কর্মবিরতি চলাকালে বাগানগুলোতে মিছিল সমাবেশ করবেন চা শ্রমিকরা।