‘আমি দোয়ারাবাজারে চেইন খোলেই চলাফেরা করি’ এমন দাম্ভিকতা নিয়ে কথাটি বলেছেন দোয়ারাবাজার ইউনিয়ন উপ সহকারী ভূমি অফিসার রঞ্জন কুমার দাস।
শুধু তাই নয়, তার বিরুদ্ধে অসদাচরণেরও অভিযোগ করেছেন উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) বিকালে দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কিরণপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস শহীদ।
অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, গত ৮ মে সোমবার বিকেল উপজেলা পরিষদের সামনে ৫ জন শিক্ষক ও উপজেলা পরিষদের সিএ সহ ইউনিয়ন ভূমি অফিসারের সাথে সাক্ষাৎ হয়। এসময় একজন শিক্ষক কথা প্রসঙ্গে ইউনিয়ন উপ সহকারী ভূমি অফিসার রঞ্জন কুমার দাসকে চা খাওয়ার জন্য আহ্বান করেন।
প্রতিউত্তরে রঞ্জন কুমার দাস বলেন, ‘চা তো খাওয়াইবেন, কারণ আমি তো আপনাদের শিক্ষক সমিতির জমির দলিল ও নামজারী বাতিল করার প্রস্তাব পাঠিয়েছি। আপনারা দেখবেন আমিও আপনাদের দোয়ারাবাজারে একটা দৃষ্টান্ত রেখে যাব। আপনারা আমার সাথে লাগালাগি করে কোন লাভ নাই। আমি তাহিরপুর থাকাবস্থায় এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের সাথে খেলে এসেছি। আমার সাথে টক্কর দিয়া পারেনাই, আপনারা কি করবেন। আমি দোয়ারাবাজারে সব সময় চেইন খোলেই চলাফেরা করি।’
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কিরণপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস শহীদ বলেন, ”আমরা ৪ জন শিক্ষক ও উপজেলা পরিষদের সিএ সহ একসাথে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলাম। এসময় মোটরসাইকেল থেকে নেমেই ভূমি অফিসার রঞ্জন কুমার দাস বলেন, ‘সব মাস্টার হকলতে কিতা করতিরা।’ আমি প্রতি উত্তরে বললাম- ‘দাদা কিছু না, আমরা আসছিলাম অফিসে আমাদের কিছু কাজ ছিল।’ এসব কথাবার্তার এক পর্যায়ে তিনি এতটাই চ্যালেঞ্জ করে বসেন। যা কোন সময় উনার কাছ থেকে আশা করিনি। তিনি নাকি তাহিরপুর উপজেলায় থাকাকালীন এমপি রতন সাহেবও উনার সাথে টক্কর দিয়ে পারেনি, আমরাও কিছু করতে পারবো না। উনি দোয়ারাবাজারে সবসময় চেইন খোলেই চলাফেরা করেন। কিছু করার মত লোক উনার চোখে পড়ে না। আমরা এ ব্যাপারে নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।”
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউনিয়ন উপ সহকারী ভূমি অফিসার রঞ্জন কুমার দাস বলেন, ‘শিক্ষক সমিতির জমির দলিল সঠিক নয়। তাদের জমির দলিল বাতিল করার জন্য প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। চেইন খোলে চলার বিষয়টি সঠিক নয়। আমি এভাবে কথাটা বলিনি।’
রঞ্জন কুমার দাস বলেন, ‘আমার অজান্তে চেইনটা খোলা ছিল। এসময় উপজেলা পরিষদের সিএ সফিকুর রহমান আমাকে বলতেছেন আমার পেন্টের চেইন খোলা। আমি ঐ সময় ডং করে কথাটা বলেছি যে প্রায় সময় আমার ভুলে চেইন খোলাই থাকে। আমি শিক্ষকদের এসব কথা বলিনি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ মুর্শেদ মিশু বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।