দোয়ারাবাজারে দ্বিতীয় বিয়ের সম্মতি দিতে স্ত্রীকে বেধড়ক মারপিট করে নিজেই হাসপাতালে ভর্তি করেছে এক বখাটে স্বামী। আহত স্ত্রীর জ্ঞান ফিরলে আবারও মারপিটের হুমকি দিয়ে হাসপাতাল থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে তিন বছরের কোলের শিশু।
শুক্রবার (০২ মে) সকালে দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের গিরিশনগর গ্রামের একরাম আলীর মেয়ে নাসিমা বেগমের বিয়ে হয় ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের উলুরগাঁও গ্রামের সমর আলীর পুত্র কামরুল হকের সঙ্গে। ২০১১ সালে পারিবারিকভাবে বিয়ে হওয়ার পর থেকে তাকে নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে বখাটে স্বামী। তাদের দাম্পত্য জীবনে তিন সন্তানের জন্ম হয়।
সম্প্রতি তার বখাটে স্বামী কামরুল হক ছাতকের জাউয়াবাজার এলাকা থেকে এক মেয়েকে নিয়ে আসে এবং বেশ কিছুদিন ধরেই বিয়ের সম্মতিতে কাগজে দস্তখত দিতে চাপ সৃষ্টি করে। স্ত্রী নাসিমা বেগম তা মেনে না নিলে এবং দস্তখত না করলে প্রতিনিয়ত অমানুষিক নির্যাতন চালায় তার ওপর।
গত মঙ্গলবার রাতে দস্তখতের জন্য চাপ দিলে স্ত্রী নাসিমা বেগম অস্বীকৃতি জানান। ওইদিন রাতে তার ওপর চালানো হয় অকথ্য নির্যাতন। একপর্যায়ে বেধড়ক মারপিট করে অজ্ঞান হয়ে পড়লে স্বামী নিজেই চিকিৎসার জন্য দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। দুইদিন পর (শুক্রবার) হাসপাতালে এসে চিকিৎসা চলাকালীন জোরপূর্বক তার কোলের শিশুকে ছিনিয়ে নেয় এবং বিয়ের সম্মতি না দিলে খবর আছে বলে হুমকি ধমকি দিয়ে যায়।
শুক্রবার সরেজমিন হাসপাতালে গেলে চিকিৎসাধীন তিন সন্তানের জননী নাসিমা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ‘আমার স্বামী একজন বখাটে প্রকৃতির লোক। দীর্ঘদিন থেকে দ্বিতীয় বিয়ে করতে উঠেপড়ে আছে। আমি সম্মতি না দেওয়ায় আমাকে নানাভাবে মারধর ও নির্যাতন করে। আমার পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গেছে। আর সহ্য করতে পারছি না। আমি তার কবল থেকে বাঁচতে চাই। শুক্রবার সকালে হাসপাতালে এসে কোলের সন্তানকে নিয়ে গেছে। আমি সুস্থ হয়ে আইনী আশ্রয় চাইবো।’