কোভিড-১৯ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলার সময়েই আরেক বাধা হয়ে সামনে আসে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। তবুও দেশে দারিদ্র্যের হার কমেছে। চলমান এই সংকটের সময়ে দেশের ধনীরা দরিদ্রদের তুলনায় দ্রুত ধনী হয়েছে। তবে দরিদ্রদের আয় বৃদ্ধি পায়নি।
ফলে আয় ও ভোগের বৈষম্য বাড়ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘গৃহস্থালী আয় ও ব্যয় জরিপ-২০২২’ সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্যে এসব কথা জানানো হয়।
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, মানুষের মধ্যে আয়বৈষম্য আগের চেয়ে বেড়েছে।
২০২২ সাল শেষে গিনি সহগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ০.৪৯৯ পয়েন্ট। ২০১৬ সালে গিনি সহগ ছিল ০.৪৮২ পয়েন্ট। সাধারণত ০.৫০০ হলেই একটি দেশকে উচ্চ আয়বৈষম্যের দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সেদিক থেকে অতি সামান্য দূরে আছে বাংলাদেশ।
জরিপে দেখা গেছে, ভোগের বৈষম্যও বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে এইচআইইএস’র গিনি কো ইফিসিয়েন্ট হলো ০.৩৪৪%, ২০১৬ সালে ছিল ০.৩২৪% এবং ২০১০ সালে ছিল ০.৩২১%।
ফলে ভোগের দিক থেকে বৈষম্য ধীরে ধীরে বাড়ছে। বর্তমানে পল্লী থেকে শহরে বৈষম্য বেশি। পল্লী এলাকায় ভোগের গিনি কো ইফিসিয়েন্ট ০.২৯১% এবং শহরে এ হার ০.৩৫৬%।
বিবিএসের তথ্য আরও বলছে, ২০২২ সালে প্রতি পরিবারের গড় মাসিক আয় বেড়ে ৩২,৪২২ টাকা হয়েছে, যা ২০১৬ সালে ছয় বছর আগে পরিচালিত সর্বশেষ জরিপের তুলনায় ১০২% বেশি। এতে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ১৮.৭% এবং চরম দারিদ্র্যের হার ৫.৬%-এ নেমে এসেছে।
২০১৬ সালে গড় মাসিক আয় ছিল ১৫,৯৮৮ টাকা, যা ২০১০ সালে ছিল ১১,৪৭৯ টাকা।
বিবিএস মনে করে, দারিদ্র্য নিরসনের এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৩১ সালের মধ্যে দেশ দারিদ্রমুক্ত হবে।
সারাদেশের ৭২০টি নমুনা এলাকায় এ জরিপ পরিচালিত হয়। প্রতিটি নমুনা এলাকা থেকে দৈবচয়ন ভিত্তিতে ২০টি করে মোট ১৪,৪০০ খানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
জরিপের প্রশ্নপত্রে মোট ১০টি সেকশন ছিল। এ ১০ সেকশনের তথ্য সংগ্রহের জন্য একজন তথ্য সংগ্রহকারী প্রতিটি খানায় ১০ বার ভিজিট করেন।
হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার (এইচআইইএস) ২০২২ জরিপে ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর অর্থাৎ এক বছর ধরে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।