সিলেটে ‘রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতা’ শীর্ষক বিভাগীয় কর্মশালায় বক্তারা বলেছেন, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ ও পারস্পরিক সমঝোতার বিকল্প নেই।
তারা বলেন, সরকার চায় সংবিধানের দোহাই দিয়ে নিজেদের অধীনে নির্বাচন করতে। বিরোধীরা চায় নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক। এই অবস্থার উত্তরণের জন্য সব রাজনৈতিক দলের সমঝোতা প্রয়োজন।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নগরীর একটি অভিজাত হোটেল দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট আয়োজিত ‘রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতা’ শীর্ষক এই বিভাগীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক সিলেট জেলা কমিটির সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বক্তারা বলেন, ‘আমাদের দেশ নিয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ নতুন নয়। এটা বন্ধ করাও কঠিন। আমরা জিম্মি হয়ে গেছি। এর থেকে মুক্তি পেতে দেশে একটিভ সিটিজেনের সংখ্যা বাড়াতে হবে। রাতারাতি কিছুই করা সম্ভব হবে না।’
বক্তারা বলেন, সরকার যদি নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের ওপর প্রভাব বিস্তার না করতো, তাহলে নির্দলীয় নিরপেক্ষ কিংবা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন হতো না। এখন দেশে একজন আমলাও পাবেন না, যিনি প্রভাবমুক্ত থেকে নির্বাচনে নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখতে পারবেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে সুশাসনের জন্য নাগরিকের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার বলেন, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী আগামী ১ নভেম্বর ২০২৩ থেকে ২৯ জানুয়ারি ২০২৪ সালের মধ্যেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আমরা চাই এই নির্বাচন হোক অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ।কিন্তু বিরাজমান রাজনৈতিক বাস্তবতা অংশগ্রহণমূলক তথা প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের জন্য অনুকূল নয়। কেননা, ক্ষমতাসীন দল চায় বর্তমান সংবিধানের আওতায় অর্থাৎ দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।
অপরদিকে বিএনপি-সহ আন্দোলনরত রাজনৈতিক দলসমূহ চায় নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন। এ নিয়ে রাজপথে সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। দিলীপ কুমার সরকার বলেন, একটি অংশগ্রহণমূলক, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, শান্তিপূর্ণ তথা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে সংলাপ ও পারস্পারিক সমঝোতা। রাজনৈতিক দলসমূহকে আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়েই সমঝোতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ এবং সমঝোতা সূত্র নির্ধারণ করতে হবে।
সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সুনামগঞ্জ জেলা সুজনের উপদেষ্টা সাবেক অধ্যক্ষ সৈয়দ মহিবুল ইসলাম, সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল সিদ্দিকী, হবিগঞ্জ জেলা সুজনের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মিসবাহুল বারী লিটন, সিলেট জেলা সুজনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ সাহেদা, সুনামগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ফজলুল করিম সাঈদ।
আলোচনায় অংশ নেন ওয়াকার্স পার্টি সিলেট জেলা সভাপতি সিকান্দর আলী, সুনামগঞ্জ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট রিপা সিনহা, সিলেট মাল্টিপার্টি এডভোকেসি ফোরামের সভাপতি এটিএম হাসান জেবুল, সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ আলম, জাসদ (ইনু) সিলেট মহানগর সাধারণ সম্পাদক গিয়াস আহমদ, সিলেট জেলা বাসদের সদস্য সচিব প্রনব জ্যোতি পাল, জেলা মৎস্যজীবী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন চৌধুরী, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সিলেট এর সাধারণ সম্পাদক খায়রুল হাসান, ১৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার আহমদ, বাসদের আহ্বায়ক আবু জাফর, ওয়াকার্স পার্টির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য হিমাংসু মিত্র, জাসদ জেলা সাধারণ সম্পাদক কিবরিয়া চৌধুরী, দিরাই প্রেসক্লা সভাপতি সামছুল ইসলাম সরদার, শাল্লা প্রেসক্লাব সভাপতি পি সি দাস, সুনামগঞ্জ জেলা সুজনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক মিলন, সাংগঠনিক সম্পাদক নূরুল হাসান আতাহার, দিরাই সুজনের সভাপতি বদিউজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক কাজী নূরুল আজিজ চৌধুরী, শাল্লা সুজনের সদস্য সচিব কালি পদ রায়, জিএসসি সিলেট সাপ্টারের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক কয়েছ আহমদ সাগর প্রমুখ।