বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেছেন, আওয়ামী লীগ লাগামহীনভাবে দেশের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। তাদের লাগামহীন লুটপাটের কারণে দেশের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। আজ নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। বিএনপির কর্মসূচি চলাকালে আমাদের একজন নেতাকে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করেছে। গুম-খুনের রাজনীতি আওয়ামী লীগের কাছে নতুন কিছু নয়। গুম-খুন করে যখন জনগণকে থামিয়ে রাখা যাচ্ছে না, তারা যখন বুঝেছে দেশের মানুষ তাদেরকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িক করবে, তখন তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে পাশ্ববর্তী দেশের কাছে ধর্না দিচ্ছে। দেশের মানুষ আজ জেগে উঠেছে। কোনো অপশক্তিই আর শেখ হাসিনাকে শেষ রক্ষা করতে পারবে না। দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো পাতানো নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না। তাই একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন না দিয়ে আর কোনো উপায় নেই।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সিলেট জেলা বিএনপি আয়োজিত র্যালি পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি সিলেট রেজিস্ট্রারি মাঠ থেকে শুরু হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আম্বরখানা পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়। র্যালিতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, দলের চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত বিভিন্ন ফেস্টুন শোভা পায়।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সহ-সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির আরও বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করে দেশে গণতান্ত্রিক রাজনীতি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। বিএনপিই একমাত্র দল, যারা দেশের পক্ষে কথা বলে, জনগণের পক্ষে কথা বলে। দেশের মানুষ আজ শহীদ জিয়ার গড়া বিএনপির নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ।
সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠন করে দেশে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছিলেন। আজকের এই দিনে আমরা তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। ইনশাআল্লাহ বেগম জিয়ার নেতৃত্বে শিগগির দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ ভোট ডাকাতির মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে দেশে এক ভয়ঙ্কর দুঃশাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, মানুষের কথা বলা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে হরণ করে দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। জনগণের প্রতিবাদ-বিক্ষোভে দিশেহারা হয়ে সরকার পুরো দেশে এক ভয়ের সংস্কৃতি চালু করেছে। আজ নারায়ণগঞ্জে বিএনপির কর্মসূচি চলাকালে আমাদের এক নেতাকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এর আগে ভোলায় বিক্ষোভ মিছিলে আমাদের দুইজন নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সরকার দুঃশাসন চালু করে মূলত জনগণের প্রতি প্রতিশোধ নিচ্ছে। বিএনপির ওপর নির্বিচারে হামলা সরকারের এক অশুভ পরিকল্পনার অংশ। এর দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে সরকারকেই বহন করতে হবে। বাংলার রাখাল রাজা, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিএনপি প্রতিষ্ঠা করে দেশে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ৯ বছর আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার আদায় করে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আজ দেশে গণতন্ত্র নেই, ভোটের নামে প্রহসনের নির্বাচন হচ্ছে। জাতীয়তাদাবী দলের প্রতিটি কর্মী প্রয়োজনে বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দিয়ে হলেও গণতন্ত্রকে পুণঃপ্রতিষ্ঠা করবে। এটাই এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অঙ্গীকার।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মিফতাহ্ সিদ্দিকী ও জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সিলেট জেলা বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট নুরুল হক, অ্যাডভোকেট আব্দুল গফফার, কামরুল হুদা জায়গীরদার, অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন, অ্যাডভোকেট এ টি এম ফয়েজ, অ্যাডভোকেট হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী, মাহবুবুর রব চৌধুরী ফয়সল, সামিয়া বেগম চৌধুরী, ইশতিয়াক আহমেদ সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন, সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, আব্দুল আহাদ খান জামাল ও মাহবুবুল হক চৌধুরী।
উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, শাহাব উদ্দিন, কোহিনুর আহমদ, আবুল কাশেম, আজিজুর রহমান আজিজ, মামুনুর রশিদ মামুন, শরীফুল হক, মাহবুব আলম, জসিম উদ্দিন, সাহাব উদ্দিন, আকবর আলী, নোমান উদ্দিন মুরাদ, মশিকুর রহমান মহি, কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, ওহিদুজ্জামান চৌধুরী ছুফি, নুরুল ইসলাম বুলবুল, নজরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আহমেদ রেজা, সারওয়ার হোসেন, মিজানুর রহমান রুমেল, জসিম উদ্দিন, তোফায়েল আহমদ চৌধুরী, ইসমাইল হোসেন সেলিম, মাসুক উদ্দিন, আব্দুর রশীদ চেয়ারম্যান, আব্দুল হাফিজ, এস টি এম ফখর উদ্দিন চেয়ারম্যান, আব্দুল্লাহ মিসবাহ, মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যান, জালাল উদ্দিন চেয়ারম্যান, মো. লিলু মিয়া চেয়ারম্যান, আব্দুল হাই ও বশির আহমদ।
অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা মহিলা দলের সভাপতি সালেহা কবীর শেপী, জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি সুরমান আলী, জেলা জাসাসের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ নিজাম উদ্দিন তরফদার, জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব তাজরুল ইসলাম তাজুল, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহিদ সোহেল, মহানগর শ্রমিক দলের আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন, মহানগর ছাত্রদল সভাপতি সুদীপ জ্যোতি এষ, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মকসুদ আহমদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব দেওয়ান জাকির হোসেন খান, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আজিজুল হোসেন আজিজ, জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিনার, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী আহসান, জেলা জাসাসের সদস্য সচিব রায়হান এইচ খান, মহানগর শ্রমিক দলের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর হোসেন জীবন প্রমুখ।
সিলেট জেলা বিএনপির এই বর্ণাঢ্য র্যালিতে বিএনপির সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ স্ব স্ব ব্যানার, জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা নিয়ে যোগদান করেন। র্যালি চলাকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করে এবং দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে স্লোগানে স্লোগানে রাজপথ মুখর করে তোলেন দলের নেতাকর্মীরা।