দূষণের বিরুদ্ধে সুরমাতীরে স্থাপত‍্য ‘করুক’

সিলেট নগরীর কিন ব্রিজ ও আলী আমজদের ঘড়িঘর ঘিরে উন্মুক্ত নাগরিক পরিসর। নদীতীর থেকে প্লাস্টিক বর্জ‍্য সুরমার বুকে জমে আরেক হাসফাঁস অবস্থা তৈরি করছে।

তাই নদীতে প্লাস্টিক বর্জ‍্য দূষণের বিরুদ্ধে অস্থায়ী স্থাপত‍্য দিয়ে জনসচেতনতায় নেমেছেন একদল স্থপতি। প্লাস্টিক বর্জ‍্যে জলজ প্রাণীর কী অবস্থা হয়, তার বাস্তব চিত্র দেখাতে নির্মাণ করেছেন অস্থায়ী স্থাপত‍্য। নাম দেওয়া হয়েছে ‘করুক’।

আজ শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল থেকে ‘করুক’ নির্মাণ শুরু হয়েছে। আগামীকাল শনিবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে উন্মোচন করা হবে অস্থায়ী স্থাপত‍্যটি।

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় লিডিং ইউনিভার্সিটির নবীন স্থপতিরা এই উদ্যোগ নিয়েছেন।

স্বেচ্ছাশ্রমে করা স্থাপত‍্যকর্মটির নাম ‘করুক’ দেওয়া হলেও দুটো বিরল প্রজাতির মাছের প্রতীকী রূপ দেওয়া হয়েছে। এর মধ‍্যে একটি হচ্ছে বিলুপ্তির তালিকায় থাকা বাঘাইড়। বাঘ মাছ নামে পরিচিত এই মাছটির পেটে প্লাস্টিক বর্জ‍্য রেখে বিপন্নতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।

করুক স্থাপত‍্যে দুটো বৃহৎ আকৃতির মাছের প্রতীকী উপস্থাপন করে দেখানো হয়েছে, প্লাস্টিক দূষণ নীরবে কী করুণভাবে জলজ প্রাণীর প্রাণ সংহার করছে।

জলজ দুই প্রাণীর স্থাপত‍্যে ব‍্যবহার করা হয়েছে পরিবেশবান্ধব উপকরণ- বিশ্ব ঐতিহ্য শীতলপাটি ও পাটজাত দ্রব‍্য। মাছের খাবার হিসেবে পেটে পুরে রাখা আছে প্লাস্টিক। নদীর জলে যত্রতত্র প্লাস্টিক না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার আহ্বানে ডাস্টবিন রাখা হয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে স্থাপত‍্যকর্মের প্রাথমিক নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন স্থপতি রাজন দাশ। এসময় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিম, করুক পরামর্শক-উপদেষ্টা উজ্জ্বল মেহেদী ও উদ্যোক্তা স্থপতি মিনহাজুল আবেদীন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

নবীন স্থপতিদের স্থাপত‍্যকর্মটির ‘করুক’ নামকরণ প্রসঙ্গে স্থপতি রাজন দাশ বলেন, এ উদ্যোগে কেবল স্থপতিরা নন, নদী-পরিবেশ-প্রাণী অধিকারকর্মী, সংস্কৃতি ও সংবাদকর্মীরা আছেন। উন্মুক্ত এই স্থাপত‍্য দেখে নদীর জলে প্লাস্টিক বর্জ‍্য দূষণবিরোধী কাজ সবাই করুক- এই চিন্তা থেকে স্থাপত‍্যের নাম ‘করুক’।