হুয়াওয়ে আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের পার্টনার ২ কানেক্ট ডিজিটাল অ্যালায়েন্সে (জোট) যোগদানের জন্য একটি বৈশ্বিক প্রতিশ্রুতি স্বাক্ষর করেছে। এ উদ্যোগটি ২০২৫ সালের মধ্যে ৮০টিরও বেশি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রায় ১২ কোটি মানুষকে কানেক্টিভিটি সুবিধার আওতায় নিয়ে আসবে। হুয়াওয়ের চেয়ারম্যান লিয়াং হুয়া প্রতিষ্ঠানটির ২০২২ সাসটেইনেবিলিটি ফোরাম, কানেক্টিভিটি+: ইনোভেট ফর ইম্প্যাক্ট এ এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে ঘোষণা করে।
কীভাবে আইসিটি উদ্ভাবন ডিজিটাল অর্থনীতির যুগে কানেক্টিভিটির ব্যবসায়িক ও সামাজিক অগ্রগতি এবং স্থায়িত্বকে ত্বরাণ্বিত করতে পারে, ফোরামে সে বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হয়।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, আইটিইউ এবং জাতিসংঘের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, কম্বোডিয়া, নাইজেরিয়া এবং পাকিস্তানের টেলিকম মন্ত্রী এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিনিধি এবং ব্যবসায়ী নেতাগণ অনলাইনে এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। পাশাপাশি, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা, বেলজিয়াম এবং জার্মানি থেকে অংশীদার, বিশেষজ্ঞ এবং ক্রেতারাও এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এছাড়াও, বিভিন্ন দেশের সাংবাদিকরাও এই অনুষ্ঠানে স্বশরীরে ও অনলাইনে যোগ দেন।
অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্যে ডক্টর লিয়াং বলেন, ডিজিটাল যুগে স্থিতিশীল নেটওয়ার্ক ব্যবহারের বিষয়টি মানুষের মৌলিক চাহিদা। যারা সংযোগবিহীন রয়েছেন, তাদের জীবন পরিবর্তনের জন্য প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত করে নির্ভরযোগ্য কানেক্টিভিটি। তিনি আরো বলেন, “সুবিধাজনক যোগাযোগের জন্য কানেক্টিভিটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ।”
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “ক্লাউড এবং কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তা (এআই)-এর মতো ডিজিটাল প্রযুক্তির সাথে একত্রে কানেক্টিভিটি প্রত্যেককে ডিজিটাল জগতে আনতে সাহায্য করবে এবং তাদের আরও তথ্য এবং দক্ষতা এবং উন্নত পরিষেবা এবং বৃহত্তর ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে সুযোগ প্রদান করবে। এর ফলে, আরও সামাজিক এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হবে।”
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, “আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য পূরণে কাজ করছি। টেলিযোগাযোগ খাতের প্রধান লক্ষ্য হলো বাংলাদেশের সকল মানুষকে কানেক্টিভিটির সুবিধায় নিয়ে আসা। শিক্ষা, শিল্প ও টেক্সটাইল সহ প্রতিটি খাতে কানেক্টিভিটির ভূমিকা অপরিসীম; তাই, আমরাও এর গুরুত্ব বুঝতে পেরেছি। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এবং সকল অংশীজনদের সহযোগিতায় আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশের ভিশন বাস্তবে পরিণত করতে পারবো বলে আমি প্রত্যাশা করছি।”
চীনে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী সিদ্ধার্থ চ্যাটার্জি নীতিনির্ধারকদের “বিভিন্ন মহলের সহযোগিতা নিশ্চিত করতে”, বেসরকারি খাত, অ্যাকাডেমিয়া ও সিভিল সোসাইটি এর প্রতিনিধিদের ডিজিটাল ব্যবধান দূরীকরণে “বাস্তবসম্মত চিন্তা” করার আহ্বান জানান, যাতে করে বিশ্ব জনসংখ্যার বাদ পড়া এক তৃতীয়াংশেকে অন্তর্ভুক্ত করা যায়।
তিনি বলেন, “বর্তমান গতিশীল বিশ্বে জরুরিভাবে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি করতে, লৈঙ্গিক ব্যবধান দূর করতে, সবুজ বিশ্বকে উৎসাহিত করতে এবং আমাদের বিশ্বকে আরও সমৃদ্ধ এবং অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নতুনভাবে ডিজাইন করতে প্রযুক্তির রূপান্তরমূলক সম্ভাবনার জন্য উন্নত ডিজিটাল সহযোগিতার প্রয়োজন। তাই, সবার সম্মিলিত প্রয়াসের এখনই সময়।” যেহেতু আইসিটি অবকাঠামো বিকশিত হচ্ছে ক্লাউড এবং এআই-এর মতো উদ্ভাবনী প্রযুক্তিগুলো গ্রামীণ এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকা মানুষদের ডিজিটাল বিশ্বের সুবিধা উপভোগ করার সুযোগ দিচ্ছে। হুয়াওয়ে ক্লাউড একটি পরিষেবা কৌশল হিসাবে সবকিছুর প্রস্তাব করেছে এবং ক্লাউড পরিষেবার মাধ্যমে হুয়াওয়ে এর ৩০ বছরেরও বেশি প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং ডিজিটাল রূপান্তরের অভিজ্ঞতা লাভ করেছে। অর্থাৎ ক্লাউডে হুয়াওয়ের ডিজিটাল অবকাঠামোর সক্ষমতার ব্যবহার এখন অনেক সহজ, সাশ্রয়ী এবং টেকসই। প্রত্যন্ত অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য ডিজিটাল রূপান্তর, ডিজিটাল ট্যালেন্ট এবং নতুন ব্যবসায়িক মডেল সবই অপরিহার্য।
হুয়াওয়ে এর আগে জানায়, ২০২৫ সালের মধ্যে উন্নত আইসিটি অবকাঠামোর সাথে প্রতিষ্ঠানটি ৫০০ মিলিয়ন মানুষকে ডিজিটাল আর্থিক পরিষেবা উপভোগ করতে এবং ৫ লাখ মানুষকে অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা প্রদানে সক্ষম করে তুলতে সহযোগীদের সাথে কাজ করবে। হুয়াওয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর চলমান প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের মাধ্যমে, হুয়াওয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে উন্নতমানের ডিজিটালাইজেশনে অবদান রাখছে; যা প্রত্যেককে ডিজিটাল জীবনের সুবিধা উপভোগ করতে সক্ষম করবে এবং বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল অর্থনীতির ভারসাম্যপূর্ণ বিকাশে সহায়তা করবে।