সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ গ্রামের স্থানীয় প্রভাবশালী চক্রের বিরুদ্ধে রেকর্ডীয় সম্পত্তি জবরদখল নিতে বৃক্ষ নিধন, ফসলি জমি নষ্ট করে পুকুর খননের অভিযোগ ওঠেছে।
শনিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন গ্রামের ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন।
সংবাদ সম্মেলনে কুলঞ্জ গ্রামের ভুক্তভোগী মনিরুজ্জামান চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে বলেন, মাইকে ঘোষণা দিয়ে গ্রামের লোকদের সংগঠিত করে কয়েকশ গরু-বাছুর ফসলি জমিতে ছেড়ে দেয়া হয় এবং এক্সেভেটর মেশিন দিয়ে ৮৫টি করচ জাতের গাছ উপড়ে ফেলা হয়। ফসলি জমির মাটি খনন করে পুকুর তৈরী করা হয়। এমনকি দিনব্যাপী চালানো এ তাণ্ডব ফেসবুকে লাইভ সম্প্রচারের মাধ্যমে উল্লাস করে হামলাকারীরা। রেকর্ডীয় সম্পত্তি জবরদখলের উদ্দেশ্যে এ হামলা চালানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে আরও জানান, দিরাই উপজেলাধীন কুলঞ্জ মৌজায় অবস্থিত জে.এল.নং- ১৪৫, আর.এস খতিয়ান- ১৮৫, আর এস দাগ নং- ৪৫৩১, ৪৫৩৮, ৪৫৩৯, ৪৫৪৩ নং দাগে মোং ৭.২২ শতক। আর.এস খতিয়ান- ১৬৮, আর এস দাগ নং ৪৫৪৪, আর এস ৪৫৪৬ দাগে ০.৮১ শতক, আর এস ৪৫৪৯ দাগে ০.১৮ শতক, আর এস ৪৫৪৫ দাগে ৩০ শতক, আর এস ৪৫৪৪ দাগে ৫২ শতক, আর এস ৪৫৪৪ দাগে ৩৮ শতক, আর এস ৪৫৪২ দাগে ১.৩৫ শতক ভূমিসহ সকল দাগে ১১ একর বোরো জমি রয়েছে। যা তাদের মৌরশী স্বত্ব ও খরিদা সম্পত্তি। তারা বংশ পরম্পরায় ভোগদখলরত আছেন এবং সরকারের হালনাগাদ খাজনাও করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গ্রামের সাবান চৌধুরী, শিপার চৌধুরী মাফি, মিজান চৌধুরী গংদের সাথে গ্রাম্য বিরোধের জের ধরে গত ২৪ জানুয়ারি সাবান চৌধুরী ও দিরাই-শাল্লা সাবেক সাংসদ নাছির উদ্দিন চৌধুরীর ছোট ভাই মিজান চৌধুরীর নেতৃত্বে তাদের অর্ধশতাধিক লোকসহ রামদা, লাটিসোটাসহ এক্সেভেটর মেশিন নিয়ে আমাদের রেকর্ডীয় ভূমির বোরো জমি জবরদখল নিতে হীরা জাতের হালি চারা গরু-বাছুর দিয়ে খাইয়ে প্রকাশ্যে নষ্ট করে এবং এক্সেভেটর মেশিন দিয়ে আমার জমির আইলে লাগানো ৮৫টি করছ গাছ একে একে নিধন করে। পরে উপড়ানো গাছগুলো তাদের লোকজন একে অন্যের সাহায্যে ধরাধরি করে টেনে নিয়ে যায়। এছাড়া এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে আমার ফসলি জমির মাটি কেটে পুকুর খনন করে। এতে আমার প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়।’
এ সময় তিনি ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ও ছবি গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রদর্শন করেন।
মনিরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, নজিরবিহীন ও ন্যাক্কারজনক এ ঘটনাটি শিপার চৌধুরী মাফি তার ফেসবুক আইডি থেকে লাইভ সম্প্রচার করে। এ ঘটনায় আমার ছেলে মিলাদ চৌধুরী বাদী হয়ে আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করেছে।
হামলাকারীরা স্থানীয় প্রভাবশালী এবং মামলা তুলে নিতে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে জানিয়ে মনিরুজ্জামান চৌধুরীর পরিবার এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবী করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কুলঞ্জ গ্রামের আব্দুল মতিন, নুরুদ্দিন চৌধুরী, জালাল উদ্দিন ডনেল, মিলাদ চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী প্রমুখ।