সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কেএম নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মসজিদ, মন্দির, কবরস্থান কিংবা শশান সকল প্রকল্প থেকেই নগদ বিশ পার্সেন্ট বিশ পার্সেন্ট ঘুষ দাবীর অভিযোগ ওঠেছে।
শুধু তাই নয়, সাইনবোর্ড, চুক্তিপত্র, মাস্টাররোল ও প্রকল্প পরিদর্শনের নামে আরও বিশ পার্সেন্ট ঘুষ দাবীর অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
বিষয়টি যখন উপজেলাজুড়ে আলোচনায় তখন এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন উপজেলার ৯ ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ২টায় দিরাই উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে জনপ্রতিনিধিরা বলেন, একলাখ টাকার প্রকল্প থেকে ৪০হাজার টাকা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে দিতে হয়। অতি দরিদ্রদের জন্য সরকারের বিশেষ প্রকল্প কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পে কাজ করা শ্রমিকদের টাকা বিকাশে প্রদান করা হয়। কিন্তু শ্রমিকদের নামে করা বিকাশের সিমগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিজের কাছে রেখে টাকা তুলে নিজের খেয়ালখুশি মতো শ্রমিকদের মাঝে বিতরণ করেন। কেউ প্রতিবাদ করলেই তার নাম বাদ দেওয়া হয় শ্রমিকের তালিকা থেকে।
তারা বলেন, একজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার কারণে উন্নয়ন কাজে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। এসব অভযোগ নিয়ে আমরা সরাসরি জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলেছি, বিগত তিনমাস যাবৎ আমরা (৯টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান) উপজেলা পরিষদের সকল মিটিং বয়কট করে আসছি, কিন্তু কোন সুরাহা হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে আজ আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছি।’
এই প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অতীতে যে সমস্ত এলাকায় কাজ করেছেন সেখানেও এরকমই করে এসেছেন উল্লেখ করে দুর্নীতিবাজ এ কর্মকর্তার দ্রুত অপসারণের দাবি করেন তারা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, ১নং রফিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শৈলেন চন্দ্র দাস, ২নং ভাটিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মামুন চৌধুরী, ৩নং রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জুয়েল মিয়া, ৪নং চরনারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পরিতোষ রায়, ৫নং সরমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েল, ৬নং করিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিটন চন্দ্র দাস, ৭নং তাড়ল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আহমদ, ৮নং জগদল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ূন রশীদ লাভলু, ৯নং কুলঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একরার হোসেন।
এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্যসহ শতাধিক ইউপি সদস্য (মেম্বার) মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
অভিযগের ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কেএম নজরুল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এখন রাস্তায় আছি, কথা বুঝা যাচ্ছে না।’
কখন কথা বলা যাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সময় হলে আমি ফোন দেব। এর পরে তাঁর সাথে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।’