দলের নেতা-কর্মীরা চাকরি না পাওয়ায় দুঃখিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী

দেশে চাকরির বাজারে ছাত্রলীগ কর্মীরা চাকরি না পাওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেছেন, আমার খুব দুঃখ লাগে আমার দলের ছেলে-মেয়েরা, ছাত্রলীগের, যুবলীগের নেতারা চাকরি করতে পারে না, ব্যবসা করতে পারে না। সামান্য ব্যবসা করতে গেলে তাদের দুর্নাম হয়। চাকরিও তারা সহজে পায় না। তারা পলিটিক্স অর্জন করেছে। এ নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। আমি সবাইকে বলবো একটা উপায় বের করার জন্য।

শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ মুজতবা আলী হলের বর্ধিতাংশের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ছাত্রলীগের কর্মীরা দেশের একটা বড় সম্পদ। তাদের যোগাযোগ দক্ষতা ও প্রচেষ্টা অনেক বেশি। চাকরিতে তাদেরকে কিভাবে সংযুক্ত করা যায় সে পন্থা আমাদেরকে বের করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ড. মোমেন বলেন, সৈয়দ মুজতবা আলী বলেছেন ‘ধনের জন্য চেষ্টা করা থেকে জ্ঞান অর্জনের চেষ্টা করা অনেক উত্তম।’ এটা সবার মনে রাখা উচিত। আর এ হলে যারা থাকবে তারা এটাও মনে রাখা উচিত। মুজতবা আলী আরও বলেছেন, ‘বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না।’ সুতরাং তোমরা বই কেনার ও বই পড়ার মনমানসিকতা গড়ে তোলো। তাহলে মুজতবা আলীর স্মৃতির প্রতি আমরা একটা দায়বদ্ধতা সম্পন্ন করতে পারব।

ড. মোমেন আরও বলেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আমার একটা দরদ আছে। এটার প্রতি একটা দায়বদ্ধতা আছে। আমরা ছাত্রজীবনে সেই ৬০ এর দশকে সিলেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আন্দোলন করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো হলেই যে সব হয়ে যাবে তা নয়। আমাদের পড়াশোনায় মনোযোগী হতে হবে। আমি শুনে খুব খুশি হয়েছি যে এ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের দুই নম্বর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করেছে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধনবাদ জানাই।

শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকায় সিলেট অঞ্চলের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, সিলেট একটি ঐতিহ্যময় শহর। এটি একটি জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তির শহর। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সাম্প্রতিককালে শিক্ষার ক্ষেত্রে সিলেট পিছিয়ে পড়েছে। একসময় সারা বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি শিক্ষিত লোক সিলেটেই ছিল। সিলেটে শিক্ষিত লোক বেশি হওয়ার ফলে ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দে যখন আসাম কমিশন তৈরি হয়, তখন এখান থেকেই বেশি লোক আসাম কমিশনে কাজ করেছিলেন।

এ সময় সিলেটের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও অভিভাবকদেরকে শিক্ষার প্রতি জোর দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে আসেন মন্ত্রী এবং পৌনে ১১টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে সকাল ১১টায় সৈয়দ মুজতবা আলী হলের সামনে ফিতা কেটে এর বর্ধিতাংশের শুভ উদ্বোধন করেন তিনি।

উদ্বোধন শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন শাবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম ও সৈয়দ মুজতবা আলীর ভাতিজা সৈয়দ রুহুল আমিন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সৈয়দ মুজতবা আলী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু সাঈদ আরেফিন খান। এ সময় আরও বক্তব্য দেন, শাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক আমিনা পারভীন, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক মো. ইশরাত ইবনে ইসমাইল প্রমুখ।