অন্তর্কোন্দলের জেরে আবাসিক হলে থাকতে এসে নিজ দলের কর্মীদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সানজিদ চৌধুরী তন্ময়।
রবিবার দিবাগত রাত দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরান হলের ভেতর শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক সজিবুর রহমানের অনুসারীরা তাকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী।
জানা যায়, মারধরের শিকার তন্ময় এর আগে সজীবুর রহমানের গ্রুপের একজন অনুসারী ছিলেন। গত কয়েকমাস পূর্বে অন্তর্কোন্দলের জেরে তন্ময়কে হল থেকে বের করে দেন ওই গ্রুপের নেতাকর্মীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় একটি মেসে উঠেন তিনি। গত রবিবার ভর্তি ফি জমা দিয়ে ফের হলে উঠার চেষ্টা করেন তিনি। এসময় মারধরের শিকার হন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রোববার মধ্য রাতে মারধরের শিকার ওই নেতা শাহপরাণ হলের ৪২৫ নম্বর রুমে গেলে সজিবুর রহমানের অনুসারী সাজ্জাদ হোসেনের নেতৃত্ব ২০ থেকে ২৫ জন ছাত্রলীগ কর্মী তন্ময়কে মারধর করেন। পরে ওই রুম থেকে বের করে সিঁড়ি দিয়ে নিচতলা পর্যন্ত মারতে মারতে হলের গেস্ট রুমে নিয়ে আসেন তারা। পরে তার দুই হাত কাপড় দিয়ে বাঁধেন কর্মীরা।
এ ঘটনায় রাত আড়াইটায় উপস্থিত হন হলের প্রভোস্ট মীজানুর রহমান, হলের সহকারী প্রভোস্ট কৌশিক সাহা, সহকারী প্রক্টর মিজানুর রহমান ও সমুদ্রবিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান সুব্রত সরকার। এসময় তাকে মারধরের বিষয়টি তারা কোনোভাবেই সমাধানের চেষ্টা না করে তার পূর্ববর্তী নানা কর্মকান্ডের সমালোচনা করে তাকে শাসান।
উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে তন্ময় মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘আমি শাহপরাণ হলের ৪২৫ নম্বর কক্ষে ভর্তি হয়েছি। রবিবার রাতে ওই রুমে গেলে তারা কয়েকজন আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। আমি নাকি ছাত্রলীগ নেতা আসাদের রাজনীতি করি। অথচ আমি সহ যারা আমাকে মারধর করেছেন তারা সবাই শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইমরান খানের রাজনীতি করি। রুম থেকে বের না হওয়ায় বনবিদ্যা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সাজ্জাদ হোসেনের নেতৃত্বে তারা আমাকে মারধর করেন। এসময় তারা আমাকে অতর্কিতভাবে কিল, ঘুষি ,লাথি মারতে থাকেন। তারপর রুম থেকে বের করার সময় ওই ব্লকের লাইট বন্ধ করে দিয়ে আমাকে তারা বেধড়ক প্রহার করেন। পরে গেস্ট রুমে নিয়ে আমার হাতও বেঁধে পেলেন তারা।
মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগ কর্মী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘‘সে আমাদের জুনিয়রের রুমে ঢুকছিল। পরে গ্রুপের সিনিয়র হিসেবে গেছি। তন্ময় আমাদের কাছের ও আদরের ছোট ভাই। তাকে মারার কোনো প্রশ্নই উঠে না। সিনিয়রদের সাথে তার একটু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল।’
মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে সজীবুর রহমান বলেন, ‘সিনিয়রদের সাথে তার একটু ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। পরে তা সমাধান করে দেয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মীজানুর রহমান বলেন, ‘তন্ময় রাতে হলে আসলে উত্তেজনার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। আমরা পরিস্থিতি বুঝে তাকে তার মেসে পাঠাই। সে হলের বৈধ শিক্ষার্থী না। মারধরের ব্যাপারে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সে আমাকে কোনা অভিযোগ দেইনি।’