তিন মাসেও খোঁজ মেলেনি নবীগঞ্জের ব্যবসায়ীর

ফয়েজের মা খাদেজা বেগম, নিখোঁজ ফয়েজ ও মামলার আসামি জাকির হোসেন।

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ফয়েজ আহমদ নামের এক ব্যবসায়ী অপহরণের ৩ মাস অতিবাহিত হলেও এখনও তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ছেলের সন্ধান না পেয়ে পাগলপ্রায় তার মা খাদেজা বেগম। মায়ের বুকফাটা আর্তনাদে আকাশ-বাতাস যেন ভারি হয়ে উঠেছে। খাদেজা বেগম তার সন্তানের সন্ধান পেতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

জানা যায়, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের জিয়াপুর গ্রামের মৃত আরজু মিয়ার ছেলে ব্যবসায়ী মো. ফয়েজ আহমদ (২৩)। গত ৩০ সেপ্টেম্বর সাড়ে ৮টার দিকে তার বন্ধু একই এলাকার বাদে রায়ঘর গ্রামের আতা মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন (২৮) তার বোনের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা বলে তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। এরপর থেকে ফয়েজ আহমদ নিখোঁজ।

আরও জানা যায়, ফয়েজ নিখোঁজের পর তার বন্ধু জাকির মাঝে-মধ্যে মোবাইল ফোনে কথা বলে আবার ফোন বন্ধ করে নানা অজুহাত দেখিয়ে গা ঢাকা দেন। পরে অপহৃত ফয়েজের মা খাদেজা বেগম তার ছেলেকে উদ্ধারের জন্য গত ২৪ অক্টোবর হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কগ-৫ আদালতে ফয়েজের বন্ধু জাকিরসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত এফআইআর গণ্যে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন নবীগঞ্জ থানার পুলিশকে।
মামলার আসামিরা হলেন- জাকির হোসেন (২৮), সামছুল হক (৪২), নিকেশ বৈষ্ণব ও মো. সুমন রানা ( ৩৫) সহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন।

এদিকে দীর্ঘ দিন পলাতক থাকার পর গত ২৮ নভেম্বর মামলার ২ নম্বর আসামি বানিয়াচং থানার নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত মজর উল্লার পুত্র সামছুল হক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমল আদালত বাহুবল হবিগঞ্জে স্বেচ্ছায় হাজিরা দিলে বিচারক আব্দুল হালিম আসামির জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে আদালত থেকে অস্থায়ী জামিন নিয়ে হাজত থেকে মুক্তি পান ওই আসামি।

ফয়েজ আহমেদ অপহরণ মামলার আসামি জাকির হোসেনসহ অন্যরা দীর্ঘদিন ধরে পলাতক থাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে অপহৃতের পরিবারে।

অপহৃত ফয়েজের মা খাদেজা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার ছেলেকে জাকির নামের যুবক তার আত্মীয়ের বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে মার্কুলি নিয়ে অন্যান্য আসামিদের সহযোগিতায় গুম বা হত্যা করেছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।