সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগের দিনে দারুণ এক সেঞ্চুরির পর চতুর্থ দিনের শুরুতেই সাজঘরে ফিরেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ফলে শঙ্কা দেখা দিয়েছিল দ্রুত গুটিয়ে যাওয়ার। তবে সেটা হতে দেননি মুশফিক-মিরাজরা। এই দুই ব্যাটারই ফিফটির দেখা পেয়েছেন। তাদের দারুণ ব্যাটিংয়ে তিনশ পেরিয়ে থেমেছে বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের জয়ের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ৩৩২ রান।
এদিকে ৩৩২ রানের টার্গেটে ব্যাটিং করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছে নিউজিল্যান্ড। মাত্র ৩০ রানেই দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে শন উইলিয়ামসের দল।
আগের দিনের ৩ উইকেটে ২১২ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। দিনের প্রথম বলেই ড্যারিল মিচেলকে এক রান নিয়ে শুরু করেন মুশফিকুর রহিম। তবে আগের দিনের অবিচ্ছিন্ন মুশফিক-শান্ত জুটি এদিন বেশি দূর এগোতে পারেনি।
দিনের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসেন টিম সাউদি। ওভারের দ্বিতীয় বলটি লেগ স্টাম্পের বাইরে করেছিলেন এই পেসার। লেগ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বলে উইকেটেরর পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন শান্ত। সাজঘরে ফেরার আগে বাংলাদেশ অধিনায়কের ব্যাট থেকে ১৯৮ বলে এসেছে ১০৫ রান।
শান্ত ফেরার পর উইকেটে এসে দ্রুতই মানিয়ে নেন শাহদাত হোসেন দিপু। ইশ সোধিকে একই ওভারে দুই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে আক্রমণাত্মক ইনিংসের ইঙ্গিত দেন তিনি। তবে থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি এই তরুণ ব্যাটার। সাজঘরে ফিরেছেন ১৯ বলে ১৮ রান করে।
শান্ত-দিপুরা দ্রুত ফিরলেও এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন মুশফিক। তার সাবলীল ব্যাটিংয়ে রানের চাকাও ঘুরছিল ঠিকমতোই। হাফ সেঞ্চুরি তুলে তিনি এগোচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। তবে ৮৫তম ওভারে অ্যাজাজ প্যাটেলের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েছেন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১১৬ বলে ৬৭ রান।
প্রথম ইনিংসে ভালো শুরু পেয়েও ইনিংস বড় করতে পারেনি নুরুল হাসান সোহান। তার সামনে সুযোগ ছিল দ্বিতীয় ইনিংসে সেই আক্ষেপ ঘুচানোর। তবে এবারও ব্যর্থ এই উইকেটকিপার ব্যাটার। গ্লেন ফিলিপসকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১০ রান।
সোহান ফেরার পর নাঈম হাসানকে সঙ্গে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন মিরাজ। ৭ উইকেটে ৩০৮ রান তুলে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। বিরতি থেকে ফিরে আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি নাঈম। দশ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ডাক খেয়েছেন তাইজুল ইসলাম। তবে শেষ উইকেটে শরিফুলকে সঙ্গে নিয়ে ২৬ রান যোগ করেছেন মিরাজ।
আরও পড়ুন > শনিবার সিলেটের যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ থাকবে না
১০ রান করে শরিফুল আউট হলে বাংলাদেশ অলআউট হয় ৩৩৮ রানে। শেষ পর্যন্ত ৫০ রান করে অপরাজিত থেকেছেন মিরাজ।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ৩১০ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের হয়ে ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় সর্বোচ্চ ৮৬ রান করেন। এছাড়া অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত-মুমিনুল হক ৩৭ রান করে, নুরুল হাসান ২৯, অভিষেক হওয়া শাহাদাত হোসেন ২৪ ও মেহেদি হাসান মিরাজ ২০ রান করেন। সফরকারীদের হয়ে পার্ট-টাইমার গ্লেন ফিলিপস সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন। কাইল জেমিসন-এজাজ প্যাটেল দুটি করে এবং ইশ সোধি ও সাউদি একটি করে উইকেট নেন।
জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩১৭ রান তুলেছে সফরকারীরা। দ্বিতীয় দিনেই ব্যাটিংয়ে নেমে ধুঁকতে থাকা নিউজিল্যান্ড শেষ পর্যন্ত লিড পায় ৭ রানের। বিরুদ্ধ কন্ডিশনে বাকি ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার বিপরীতে একপ্রান্ত আগলে রেখে অনবদ্য সেঞ্চুরি তুলে নেন সাবেক কিউই অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসন। শেষ পর্যন্ত সাজঘরে ফেরার আগে করেন ২০৫ বলে ১০৪ রান। চলিশোর্ধ্ব রানের ইনিংস রয়েছে গ্লেন ফিলিপস ও ড্যারিল মিচেলের। শেষ দিকে টিম সাউদির ৬২ বলে ৩৫ ও কাইল জেমিসনের ৭০ বলে ২৩ রানের সুবাদে লিড পায় কিউইরা।
বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট তুলে নিয়েছেন তাইজুল। এ ছাড়া পার্ট টাইমার মুমিনুলের দখলে গেছে তিনটি উইকেট। একটি করে উইকেট দখলে নিয়েছেন বাকি তিন বোলার শরিফুল, মিরাজ, নাইম।