তাহিরপুরে মুয়াজ্জিনকে পিটিয়ে হত্যা, মামলা

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় ক্ষেতের আইল ধরে গরু-ছাগলের চলাচলকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে মাস দুয়েক ধরে বিরোধ চলছিল। এর জেরে বুধবার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় ষাটোর্ধ এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এক নারীসহ আরও দুইজন আহত হয়েছেন।

ঘটনাটি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী বড়গোপ টিলা এলাকার। নিহত বৃদ্ধ উপজেলার বড়গোপ টিলা গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে আব্দুল হাসিম (৬৫)। তিনি স্থানীয় বড়গোপ টিলা উত্তরপাড়া মসজিদের মুয়াজ্জিন ছিলেন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বড়গোপ টিলার যে জায়গায় বসে তিনি মসজিদ উন্নয়নের জন্য টাকা তুলতেন সেখানেই তাঁকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে।

এদিকে এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে নিহতের ছেলে বাদী হয়ে তাহিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

নিহতের ছেলে মাসুক মিয়া(৩৫) ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বড়গোপ টিলা গ্রামের জমির আলীর পরিবারের সাথে মাস দুয়েক ধরে ক্ষেতের আইল দিয়ে গরু-ছাগলের চলাচলকে কেন্দ্র করে বিরোধ ছিল নিহতের পরিবারের। এ নিয়ে মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) দুই পরিবারের লোকজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় এবং উত্তেজনা বিরাজ করে। দুই পরিবারের মধ্যে চলা এই বিরোধ শুক্রবার (২৬ আগস্ট) সালিশের মাধ্যমে মিটমাট করার দিন ধার্য্য ছিল। কিন্তু বুধবার (২৪ আগস্ট) আসরের নামাজ শেষে বড়গোপ টিলা সংলগ্ন কমিউনিটি ক্লিনিকের সামনের রাস্তায় প্রতিপক্ষের লোকজন নিহত আব্দুল হাসিমের উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় আব্দুল হাসিমকে উদ্ধার করে চাঁনপুর বাজারের এক ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে সেখানে তিনি মারা যান।

বড়গোপ টিলার এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নিহত আব্দুল হাসিমকে বড়গোপ টিলার যেখানে পিটানো হয়েছে তিনি ওই স্থানে বসেই স্বেচ্ছাশ্রমে মসজিদ উন্নয়নের জন্য টাকা-পয়সা কালেকশন করতেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য কফিল উদ্দিন জানান, ক্ষেতের আইল দিয়ে গরু-ছাগলের চলাচল নিয়া আগে থেকেই নিহত আব্দুল হাসিম ও জমির আলীর পরিবারের মধ্যে বিরোধ ছিল। এ নিয়ে শুক্রবার সালিশে বসার কথা ছিল। তিনি আর জানান, আব্দুল হাসিম স্বেচ্ছাশ্রমে বড়গোপ টিলা মসজিদে মুয়াজ্জিনের দায়িত্ব পালন করতেন।

তাহিরপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ তরফদার বলেন, এ ঘটনায় নিহতের ছেলে বাদী হয়ে মামলা করেছেন। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই আসামিদের নাম ও সংখ্যা বলা যাচ্ছে না। ঘটনায় জড়িতদের আটক করতে রাত থেকেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।