প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা পাল্টাপাল্টি মিছিল-শোডাউনে নেমেছেন। প্রার্থীদের এমন সরব প্রচারণায় ভোটের উত্তাপ লেগেছে হাওর জনপদ তাহিরপুরে। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে ২১ মে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৫৫ হাজার ৬৫৩জন।
তাহিরপুর হাওরবেষ্টিত ভারত সীমান্তবর্তী একটি উপজেলা। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে এটি পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিত পেয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদেও এ উপজেলার প্রাচুর্যতা রয়েছে। যে কারণে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে প্রার্থীদের দেওয়া নানা প্রতিশ্রুতির বড় অংশ জুড়ে থাকে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, হাওড়ের জীববৈচিত্র্য রক্ষা, পর্যটনের বিকাশের কথা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। তফসীল ঘোষণার পর থেকেই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে হাওর, পর্যটন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার অবকাঠামোগত উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতির জানান দিচ্ছেন প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা। তবে এখানে নির্বাচন থেকে দূরে আছেন বিএনপির নেতারা। জাতীয় নির্বাচনের মতো এ নির্বাচনও বয়কট জানিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচার দিচ্ছেন তারা।
ভোটাররা বলছেন, এবারের নির্বাচনে মূল লড়াইটা হবে নবীন-প্রবীণে। তাছাড়া প্রার্থীদের বেশিরভাগই আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য এডভোকেট রনজিত সরকারের বলয়ের নেতা। তাদের মধ্যে কোন প্রার্থীকে নির্বাচিত করলে এলাকার উন্নয়নে বেশি ভূমিকা রাখতে পারবেন সেদিকটাতেও নজর রাখছেন ভোটেরদের একটি অংশ। যে কারণে প্রার্থীদের কেউ কেউ তলে তলে স্থানীয় সংসদ সদস্যের আনুকূল্য বা সমর্থন পেতে মরিয়া। কিন্তু এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন না হওয়ায় এবং নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী নিষেধ থাকায় সে সুযোগ পাচ্ছে না প্রার্থীরা। যেকারণে স্থানীয় সাংসদকেও কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে না।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ভোটের লড়াইয়ে আঞ্চলিকতার বিষয়টিও জয়-পরাজয়ে ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারণ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের চারটিতেই এবার প্রার্থী রয়েছেন। তাই এ বিষয়টাতে প্রার্থীদের যেকেউ চমক দেখাতে পারেন। গত নির্বাচনে এখানে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আনিসুল হক আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুলের নিকট প্রায় ২৬ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। বিজয়ী প্রার্থী বাবুল পান ৫০ হাজারের বেশি ভোট। তবে বর্তমান চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল এ নির্বাচনে ভোটে লড়ছেন না। শুরুতে ভোটে লড়তে মনোনয়নপত্র জমা দিলেও শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তবে কি কারণে নির্বাচন থেকে তিনি সরে দাঁড়িছেন তা জানা যায়নি।
এবার তাহিরপুরে চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তারা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন খাঁন (কাপ-পিরিচ), বাদাঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আফতাব উদ্দিন (আনারস), বড়দল উত্তর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাসেম (মোটরসাইকেল), তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা বুরহান উদ্দিন (দোয়াত-কলম), উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আলী মর্তুজা (ঘোড়া) ও প্রবাসী মিঠু রঞ্জন পাল (হেলিকপ্টার)।