সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে পাটলাই নদীতে বিআইডব্লিউটি’র চাঁদা উত্তোলন নিয়ে তিন গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় ৪০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে শ্রীপুর বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে।
সংঘর্ষে গুরুতর আহত ২৬ জনকে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল এবং সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য আহতদের শ্রীপুর উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে আছেন, তরং গ্রামের রনিক, সম্রাট তালুকদার, লোকমান, নজির, রুখন, আনেয়ার হোসেন, কুড়েপাড়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য শাহনুর মিয়া, মোরাদ মিয়া, কবির মিয়া, মোরছালিন, তানজিল, তারিকুল, সামু, খলিল ও হাসান মিয়া। অন্য আহতদের নাম জানা যায়নি।
জানা গেছে, উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের পাটলাই নদীতে বিআইডব্লিউটিএ’র নামে নদীতে চলাচলকারী নৌযান থেকে গত দুই মাস ধরে চাঁদা তুলে আসছিলেন তরং ও নয়াবন্ধ গ্রামের সামাদ ও রিফাত গংরা। গত কয়েকদিন আগে বিআইডব্লিউটি’র লিজ গ্রহিতা আশরাফুজ্জামান রনির দেখভালকারী অলি তাদের বাতিল দিয়ে নতুন করে মন্দিয়া গ্রামের সাজিনুর মেম্বারের ছেলে জিলানী গংদের চাঁদা তোলার দায়িত্ব দেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কয়েকদিন ধরে ফেসবুক ও মোবাইল ফোনে হুমকি-ধমকি চলে আসছিল।
এরই জের ধরে গতকাল রোববার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে সাজিনুরের ছেলে জিলানী সামাদ তালুকদারকে মোবাইল ফোনে হুমকি ও গালিগালাজ করেন। আজ সোমবার সকালে বাজারে তরং গ্রামের সামাদ তালুকদার ও শিবরামপুর গ্রামের আকিক মড়লের মধ্যে এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তরং, শিবরামপুর ও কুড়েপাড়া গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শ্রীপুর বাজারে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
সংঘর্ষ চলাকালে বাজারের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। বাজারের বেশ কয়েকটি দোকানঘর ক্ষতিগ্রস্তও হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
শ্রীপুর বাজার বণিক সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, পাটলাই নদীতে বিআইডব্লিউটি’র চাঁদা উত্তোলন নিয়ে বাজারে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে প্রায় ৪০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষে বাজারের ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। অনেকের ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে।
পাটলাই নদীর বিডব্লিউটি’র ইজারাদার আশরাফুজ্জামান রনি বলেন, গত দুই মাস ধরে রিফাত ও সামাদ গংরা নদী থেকে ইজারার নামে চাঁদাবাজি করছে। বিষয়টি টের পেয়ে গত কয়েকদিন আগে তাদের আমার এখান থেকে বিদায় করে দিয়েছি। আজ শ্রীপুর বাজারে যে সংঘর্ষ হয়েছে এটা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। এই মারামামারির সঙ্গে আমার বা বিডব্লিউটি’র ইজারার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, সংবাদ পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।