সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঘাগড়া-লাউড়েরগড় নৌঘাটের খাস কালেকশনের আড়ালে হরিলুট অব্যাহত রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, আদালতের নিষেধাজ্ঞা জানার পরও তা কার্যকর না করে প্রশাসন নানা টালবাহানা করে সময়ক্ষেপন করছেন।
বুধবার (২৮ জুন) এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এই নৌঘাটের খাস কালেকশন স্থগিতে আদালতের আদেশ কার্যকরে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
তবে উপজেলা প্রশাসন বলছেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞার কোনো চিঠি না পাওয়ায় খাস কালেকশন স্থগিতে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। তবে দরপত্র আবেদনকারী জানাচ্ছেন, নৌঘাটের খাস কালেকশন স্থগিত আদেশের আদালতের কপি উপজেলা প্রশাসনের নিকট স¦শরীরে গিয়ে উপস্থাপন করেছি। এরপরও এখন পর্যন্ত আদালতের আদেশ কার্যকরে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
এদিকে গত মঙ্গলবার (২০ জুন) বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের ও মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর দ্বৈত বেঞ্চ ঘাগড়া হতে লাউড়েরগড় নৌঘাটের খাস কালেকশন স্থগিতের আদেশসহ আগামি ৭ দিনের মধ্যে দরপত্র আবেদনকারীকে কেন ঘাটের দখল বুঝিয়ে দেয়া হবে না এ মর্মে রুল জারি করেন।
জানা গেছে, ঘাগড়া-লাউড়েরগড় নৌঘাটের ইজারার মেয়াদ শেষে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে নির্বাচিত হোন মনসুর আলম। এ কাজে তিনি ৪৫ লাখ টাকা পে অর্ডারও করেন। যা এখনও জমা রয়েছে। এ অবস্থায় মুনসুর আলমকে ঘাট না বুঝিয়ে সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অধীনে খাস কালেকশন দেয় প্রশাসন। অভিযোগ রয়েছে খাস কালেকশনের জন্য উন্মুক্ত নিলাম পদ্ধতিও অনুসরণ করা হয়নি।
এদিকে খাস কালেকশনে এই ঘাট দিয়ে মালামাল বহনকারী প্রতিটি নৌকা থেকে নুন্যতম একশ টাকা ও সর্বোচ্চ সাতশ টাকা টোল আদায়ের কথা। কিন্তু এসব মালবাহী প্রতিটি নৌকা থেকে প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে পাঁচশ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত টোল আদায় করছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল। সব মিলিয়ে এই নৌঘাট থেকে কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
মামলার বাদী ও টেন্ডার আবেদনকারী মো. মনসুর আলম বলেন, মহামান্য হাইকোর্ট ঘাগড়া হতে লাউড়েরগড় নৌঘাটের খাস কালেকশনে স্থগিত আদেশের পাশাপাশি ঘাটের দখল কেন বুঝিয়ে দেয়া হবেনা এ মর্মে রুল জারির পরও আমাকে ঘাট বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে না। উল্ঠো খাস কালেকশনের নাম করে সরকারের রাজস্ব লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোকজন।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারি কমিশনার (ভূমি) আসাদুজ্জামান রনি বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞার কোনো চিঠি পাইনি। তবে এ নিয়ে দরপত্র আবেদনকারীর কাছ থেকে একটি চিঠি পেয়েছি। সে অনুযায়ী এটা কিভাবে নিষ্পত্তি করা যায় তা জানতে আমাদের বিজ্ঞ জিপি মহোদয় সুনামগঞ্জের নিকট চিঠি দিয়েছি।