দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য ঘোষিত তফসিল বাতিল করে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। একইসাথে দলটি ঘোষিত তফসিলকে ‘একতরফা’ দাবি করে এর প্রতিবাদে রোববার ভোরে শুরু হওয়া ৪৮ ঘণ্টার হরতালে সবাইকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছে।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দলের পক্ষে এই আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘অবৈধ আওয়ামী সরকারের পদত্যাগসহ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের এক দফা দাবিতে নির্বাচন কমিশনের একতরফা তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে এই হরতাল। রোববার ভোর ৬টায় শুরু হতে দেশব্যাপী এই হরতাল কর্মসূচি মঙ্গলবার ভোট ৬টায় শেষ হবে। এটি হবে শান্তিপূর্ণ হরতাল।’
নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন না দিলে সরকারের পতন হবে। আপনারা যে তফসিল ঘোষণা করেছেন তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করুন। নির্বাচন স্থগিত করে আগে পদত্যাগ করুন। অন্যথায় এই ফরমায়েশি একতরফা নির্বাচন জনগণ সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করবে।’
আরও পড়ুন > বিক্ষোভ মিছিল থেকে ককটেল বিষ্ফোরণ, হঠাৎ উত্তপ্ত সিলেট
রিজভী বলেন, ‘এই হরতাল হচ্ছে অধিকার আদায়ের হরতাল, অন্যায়ের বিরুদ্ধে হরতাল। গণতন্ত্রকামী মানুষকে অন্যায়ভাবে জুলুম-নিপীড়ন-নির্যাতন করে ফরমায়েশি রায়ে যে ভয়ংকর ও পৈশাচিক নির্যাতন করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের হরতাল। অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে এই হরতাল।
‘সারাদেশের মানুষ বহুদিন ধরে অধিকার বঞ্চিত, মালিকানা বঞ্চিত। জনগণের মালিকানা জনগণকে ফেরত দিতেই এ আন্দোলন।’
রিজভী বলেন, ‘দেশের কারাগারগুলোতে ধারণ ক্ষমতার কয়েকগুণ বন্দি। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীতে উপচে পড়ছে কারাগারগুলো। অনেককে আটকে রেখে মুক্তিপণ নিচ্ছে পুলিশ, নেতা-কর্মীদের না পেয়ে আত্মীয়-স্বজনদের আটক করে মারধর করছে পুলিশ।
আরও পড়ুন > রাজধানীতে দুটি বাসে দুর্বৃত্তদের আগুন
‘পুলিশকে গ্রেপ্তার-বাণিজ্যের লাইসেন্স দিয়েছেন শেখ হাসিনা। কার্যত দেশে আইনের শাসনের মূলোৎপাটন করা হয়েছে। গায়েবি মামলা ও গ্রেপ্তার আতঙ্কে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দুঃসহ জীবন অতিবাহিত করছেন।
‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করা হয়েছে। তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে দেয়া হচ্ছে না।’
‘তবে এতো সব করে এবার আর পার পাওয়া যাবে না। অধিকার আদায়ের দুর্বার আন্দোলনে জনগণ রাজপথে নেমে এসেছে।’
আরও পড়ুন > অবশেষে রাজপথে আরিফুল হক, হরতালের সমর্থনে মিছিল
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৩০২ জন নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন মামলায় পুলিশ ১৩ হাজার ২১০ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।’