দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ সামান্য বেড়েছে। সদ্য সমাপ্ত ডিসেম্বর মাসে ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৮ হাজার ১৮৬ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা হিসাবে)। এর আগের মাস নভেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৫৯ কোটি ৫১ লাখ মার্কিন ডলার।
এছাড়া ২০২১ সালের ডিসেম্বরের চেয়ে প্রায় ৭ কোটি ডলার বেশি এসেছে এই ডিসেম্বরে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬৩ কোটি ডলার।
রোববার (১ জানুয়ারি) প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।
রেমিট্যান্স প্রবাহ পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম (জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত) ৬ মাসে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ৪৯ কোটি ৩২ লাখ মার্কিন ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১ হাজার ২৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। সেই হিসাবে এ অর্থবছরের ১ম ৬ মাসে ২৫ কোটি ৩৭ লাখ মার্কিন ডলার বেশি এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, ডিসেম্বরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৪ কোটি ৬৫ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৩ কোটি ৮৭ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৪০ কোটি ৭৬ লাখ ২০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৭ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার।
অন্যান্য সময়ের মতো এবারও ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে। ডিসেম্বরে ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৫০ কোটি ১০ লাখ ডলার। এরপরই রয়েছে অগ্রণী ব্যাংকের অবস্থান। ব্যাংকটির মাধ্যমে ৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এছাড়া সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৮৮ লাখ ডলার এবং ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৬২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
অর্থপাচার ও কালো টাকা না কমলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাড়বে না- বিভিন্ন মহলের এমন বার্তার পর হুন্ডি প্রতিরোধে নতুন কৌশলে নামে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। সম্প্রতি হুন্ডির মাধ্যমে পাঠানো রেমিট্যান্সের ২৩০ জন বেনিফিশিয়ারির হিসাবে সাময়িকভাবে উত্তোলন স্থগিত করে বিএফআইইউ। বলা হয়, ভবিষ্যতে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাবে- এমন প্রতিশ্রুতি দিলে হিসাবগুলো খুলে দেওয়া হবে। হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রতিরোধে এমন কিছু নতুন কৌশল নিয়েছে বিএফআইইউ।
এছাড়া রেমিট্যান্স বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে বৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা প্রদান, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করা, পাশাপাশি অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ন অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধকরণ এবং রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা।