কাতারের আল থুমামা স্টেডিয়ামে সেনেগালকে ২-০ গোলে হারিয়েছে নেদারল্যান্ডস। কোডি গ্যাকপোর পর ডাচদের হয়ে ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটি করেছেন ডেভি ক্লাসেন।
এই জয়ে ৩ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের দ্বিতীয় স্থান দখল করলো নেদারল্যান্ডস। সমান তিন পয়েন্ট হলেও গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকায় ‘এ’ গ্রুপের শীর্ষে এখন ইকুয়েডর। গ্রুপের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক কাতারকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে তারা। ২ গোল হজম করেও তৃতীয় স্থানে আছে সেনেগাল আর গ্রুপের তলানিতে কাতার।
বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে কখনো হারেনি সেনেগাল, সেই ধারাবাহিকতাটাই হয়তো এবারের বিশ্বকাপেও বজায় রাখতে পারতো আফ্রিকার দেশটি। কিন্তু ম্যাচ শেষের সাত মিনিট আগে বাধ সেধে বসেন ডাচ স্ট্রাইকার কোডি গ্যাকপো। বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচেই গোল করেই দৃশ্যপট বদলে দিয়েছেন ২৩ বছর বয়সী এ উইঙ্গার। আর তাতে ৮ বছর পর বিশ্বসেরার মঞ্চে ফিরে শুভসূচনা করে নেদারল্যান্ডস।
নিজেদের সবচেয়ে বড় তারকা সাদিও মানেকে ছাড়া বিশ্বকাপ মঞ্চে নামা সেনেগাল কিছুটা হলেও কাগজে কলমে পিছিয়ে ছিল নেদারল্যান্ডসের চেয়ে। তবে ম্যাচ শুরু হতে পালেটে যায় হিসাব।
আল তুমামা স্টেডিয়ামে সেনেগালের গতির সঙ্গে পাল্লা দিতে যেয়ে নাভিশ্বাস উঠে যায় নেদারল্যান্ডসের। প্রথমার্ধে খেলা গোলশূন্য থাকলেও দুই দলই উপভোগ্য লড়াই উপহার দেয়।
শুরুতে কোডি গেকপোর সুযোগ গোল লাইন থেকে ফিরিয়ে দেয় সেনেগালের রক্ষণভাগ। আর সেনেগালের পক্ষে প্রথম সুযোগ পান ইসমালিয়া সারে। তার শট বারের ওপর দিয়ে চলে যায়।
প্রথম পরিষ্কার সুযোগ পান ফ্র্যাংকি ডি ইয়ং। এদুয়ার্দো মেন্ডিকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি ডাচ মিডফিল্ডার।
সেনেগালের সারের শট ঠেকিয়ে দলকে নির্ভার রাখেন নেদারল্যান্ডসের রক্ষণের মূল ভরসা ভার্জিল ফন ডাইক। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের মাঝে গোল ছাড়া শেষ হয় প্রথমার্ধ। বিরতির পর গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে নেদারল্যান্ডস। নিজেদের ছন্দে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় তারা।
গোল পেতে বেশ কিছুটা অপেক্ষায় থাকতে হয় তাদের। ৮৪ মিনিটে ফ্র্যাঙ্কি ডি ইয়ংয়ের ক্রসে হেড করে সেনেগালের গোলকিপার এদুয়ার্দো মেন্দিকে বোকা বানান গেকপো। পিএসভি আইন্দহোফেনের এ ফরোয়ার্ডের এটি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ। আর প্রথম ম্যাচেই দলকে জয়ের একেবারে কাছে নিয়ে যান তিনি।
তবে ডাচদের আরও চমক বাকি ছিল। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে উচ্চগতির ফুটবল খেলতে থাকা সেনেগাল শেষ মুহুর্তে বেশ কিছু ভুল করে বসে।
যার একটি করেন অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার কালিদু কোলিবালি। ওয়ান অন ওয়ানে তিনি আটোকাতে পারেননি নেদারল্যান্ডসের মেম্ফিস ডিপায়কে। ডিপায় ডিফেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে জোরালো শট নেন গোলে। তার শট ঠেকিয়ে দিলেও গ্লাভস করতে পারেননি মেন্দি। ফিরতি বলে শট নিয়ে দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন ক্লাসেন। এরপরই বেজে ওঠে রেফারির বাঁশি।
২-০ গোলের জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করার পাশাপাশি টানা ১৬ ম্যাচ অপরাজিত রইল নেদারল্যান্ডস। আর আন্তর্জাতিক ফুটবলে এটি ছিল প্রথম নেদারল্যান্ডস-সেনেগাল লড়াই। ম্যাচে দ্বিতীয় সেরা হয়েই থাকতে হলো সেনেগালকে।
নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে শুক্রবার ইকুয়েডরের বিপক্ষে খেলবে ডাচরা। আর একই দিন কাতারের বিপক্ষে মাঠে নামবে সেনেগাল।