২০১৪ বিশ্বকাপের সেই সেমিফাইনাল ঘুরে-ফিরে আসছে সামনে। সেবার ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল নেদারল্যান্ডস ও আর্জেন্টিনা। কিন্তু টাইব্রেকারে রোবেন-স্নেইডারদের হারিয়ে ফাইনালে উঠে যায় মেসির দল। সেই পরাজয়ের দগদগে ক্ষত এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে নেদারল্যান্ডস।
এবার যখন আবারও কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে পেয়ে গেল তখন ডাচ কোচ লুই ফন গালের হুমকি, আট বছর আগের প্রতিশোধ নিতে চান তিনি। সেবারও ডাচদের কোচ ছিলেন তিনি। এবারও কোচ। ফুটবলারদের চেয়ে ক্ষতটা বেশি বয়ে বেড়াচ্ছেন নেদারল্যান্ডস কোচই বেশি।
তবে ডাচদের হুমকি নয়, আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনিকে সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে চোট সমস্যা। অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, লওতারো মার্টিনেজের পাশাপাশি চোট রয়েছে রদ্রিগো ডি পলের। ডাচদের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে এই সিমস্যা কিভাবে সামাল দেবেন, সেটাই এখন চিন্তা স্কালোনির।
আজ শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে দোহার লুসাইল স্টেডিয়ামে নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হচ্ছে মেসিদের আর্জেন্টিনা। বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার ম্যাচের আগের সংবাদ সম্মেলনে আর্জেন্টিনা কোচ স্কালোনি বলেছেন, ‘বুধবার রুদ্ধদ্বার অনুশীলন করেছি আমরা। জানি না রদ্রিগোর সমস্যা সম্পর্কে বাইরে কী কী লেখা হয়েছে। তার একটা সমস্যা রয়েছে এটা ঠিক। তবে বাড়াবাড়ি কিছু নয় বলেই মনে হয়েছে। সে বুধবার ভালোভাবেই অনুশীলন করেছে। কেউ কেউ ক্লান্তির কারণে অর্ধেক অনুশীলন করেছে। অনেকে সাবধানতা অবলম্বন করতে গিয়েও অনুশীলন করেনি। সংবাদমাধ্যমে যা বেরোয় সেটা অনেক সময় সত্যি হয় না।’
নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে আলাদা করে মেসির কোনো ভূমিকা থাকছে? স্কালোনি বলেন, ‘লিও এমনিতেই বাকিদের চেয়ে আলাদা। মাঝে মাঝেই তার ভূমিকা বদলে যায়; কিন্তু এখনই সব বলে দিয়ে প্রতিপক্ষকে সতর্ক করে দিতে চাই না। আমরা যেসব ম্যাচ খেলেছি সেগুলো নিশ্চয়ই প্রতিপক্ষ দেখেছে।’
নকআউটের ম্যাচ পেনাল্টিতে গড়াতে পারে। তার জন্য কি আলাদা করে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে? স্কালোনির উত্তর, ‘ছেলেরা প্রতিদিনই অনুশীলন করে। আশা করি ম্যাচেও ওদের কোনো সমস্যা হবে হবে না। ১২০ মিনিটের পর পেনাল্টি নেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। আমরা ম্যাচটা নির্ধারিত সময়েই জেতার লক্ষ্য রাখছি। যদি টাইব্রেকারে চলে যায়, তখন ওটা নিয়ে ভাববো।’
বিশ্বকাপে দু’বার আর্জেন্টিনার কাছে হেরেছে নেদারল্যান্ডস। ২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের আগে ১৯৭৮ বিশ্বকাপের ফাইনাল। মারিও ক্যাম্পেসদের কাছে সেবার ৩-১ গোলে ফাইনালে হেরেছিল ডাচরা।
মূলত ২০১৪ সালের হারটাই বেশি পোড়াচ্ছে কোচ ফন গালকে। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালে হারের যে তিক্ত স্বাদ পেতে হয়েছিল আমাদের, তা শুক্রবার মিটিয়ে দিতে চাই। আমার মতে, আর্জেন্টিনা বিশ্বের অন্যতম সেরা দল; কিন্তু শুক্রবার থেকেই আমাদের আসল বিশ্বকাপ শুরু হচ্ছে। আগের ম্যাচগুলোর কোনো গুরুত্ব ছিল না সেটা বলছি না। কিন্তু আর্জেন্টিনা বা ব্রাজিল এমন দল যাদের সঙ্গে অতীতের কোনও দলেরই তুলনা চলে না।’
এদিন মাঠ ঠাসা থাকবে আর্জেন্টিনার সমর্থকে। সে প্রসঙ্গে ফন গাল বলেন, ‘আমার ফুটবলাররা যথেষ্ট পেশাদার। ওরা জানে কিভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয়। যদি গ্যালারিতে ৪০ হাজার আর্জেন্টাইন থাকে, তাহলে আমাদেরও হাজার হাজার সমর্থক থাকবে।’