ডলার সাশ্রয়ে ফাইভ-জি প্রযুক্তি থেকে সরে এলো সরকার

অর্থ সাশ্রয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় টেলিটকের ফাইজ-জি প্রযুক্তি চালুর পরিকল্পনা থেকে আপাতত সরে এসেছে সরকার। মঙ্গলবার (২ আগস্ট) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ সংক্রান্ত ২৩৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ের একটি প্রকল্প স্থগিত করা হয়েছে।

প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী, এর ৮০ শতাংশ ইক্যুইপমেন্ট বিদেশ থেকে ডলার দিয়ে কেনার বিষয় ছিল।

মঙ্গলবার প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। তবে ব্যয় সংকোচনের জন্য প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন না দিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এই মুহূর্তে টেলিটকের ফাইভ-জি দরকার নেই। ফোর-জি গ্রাম ও হাওর এলাকায় সার্ভিস পাচ্ছে না। ফোর-জি আগে আপডেট করো, তারপর ফাইভ-জি। এই মুহূর্তে ব্যয় সংকোচন করছি।’

আগারগাঁওয়ে এনইসি সম্মেলনকক্ষে একনেক সভায় এ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বিস্তারিত তুলে ধরেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কৃচ্ছ্রতা সাধনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। প্রকল্পের ৮০ শতাংশ ব্যয় ফরেন কারেন্সির (বিদেশি মুদ্রা) মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। এতে করে রিজার্ভ থেকে ব্যয় পরিশোধ করতে হবে। তাই এটা স্থগিত করা হয়েছে। এটা পরে বাস্তবায়ন করা হবে। এ জন্য একনেক সভায় বৈদেশিক ঋণ খুঁজতে বলা হয়েছে।’

পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মামুন আল রশীদ বলেন, ‘টেলিটকের ফোরজি পুরোপুরিভাবে সফল হয়নি। তাই আগে ফোর-জি পরে ফাইভ-জি। প্রকল্পের ৮০ শতাংশ রিজার্ভ থেকে দিয়ে আমদানি করতে হবে। তাই বিদেশি সোর্স থেকে নিয়ে আলোচনা হবে।’

প্রকল্প প্রস্তাবনা অনুযায়ী, ঢাকা শহরে টেলিটকের বিদ্যমান ২০০টি ফাইভ-জি বিটিএস সাইটে ফাইভ-জি প্রযুক্তিনির্ভর টেলিকম যন্ত্র সংযোজন, টাওয়ার ও কক্ষ অবকাঠামোর প্রয়োজনীয় সংস্কার, বিদ্যুৎ সংযোগের ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি, রেকটিফায়ার ও ব্যাটারি ক্যাপাসিটি বৃদ্ধিকরণ, নেশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) অপারেটর হতে ভাড়াভিত্তিতে প্রস্তাবিত ২০০টি ফাইভ-জি সাইটে উচ্চগতির লাস্টমাইল ট্রান্সমিশন সংযোজন, ৫০টি সাইটে মাইক্রোওয়েভ রেডিও যন্ত্রাংস স্থাপন এবং এক লাখ গ্রাহক ক্ষমতাসম্পন্ন আইএসএম প্ল্যাটফর্ম স্থাপন এবং বিদ্যমান কোর নেটওয়ার্ক সিস্টেমের প্রয়োজনীয় আপগ্রেডেশন ও সম্প্রসারণের কথা ছিল।

এটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় গণভবনসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সরকারি গূরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো, মোহাম্মদপুর, শেরে বাংলা নগর, বনানী, গুলশান, ক্যান্টনমেন্ট ও উত্তরা থানা এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় বঙ্গভবন ও সচিবালয়সহ মতিঝিল, রমনা, শাহবাগ ও ধানমন্ডি থানার সরকারি গুরুত্বপূর্ণ ও বাণিজ্যিক স্থাপনাগুলো ৫-জি এর আওতায় আসতো।