পর্যটন অধ্যুষিত জেলা মৌলভীবাজারে সারাবছরই পর্যটকের আগমন ঘটে। টানা ছুটি পেলে পর্যটকের সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এবারও ২৩ থেকে ২৪ ডিসেম্বর সাপ্তাহিক ছুটি ও ২৫ ডিসেম্বর বড়দিন উপলক্ষে টানা ৩ দিনের ছুটিতে পর্যটন জেলা মৌলভীবাজারে পর্যটকের ঢল নেমেছে।
আবাসিক হেটেল-মোটেল-রিসোর্ট কোথাও রুম খালি নেই। পর্যটন ব্যবসা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসবেন এ জেলায়।
এক মাস আগে থেকেই বুকিং শুরু হয় হোটেল মোটেলে। এক সপ্তাহ আগেই শতভাগ বুকিং হয়ে গেছে। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানসহ আশেপাশের একালাগুলোতে সকাল থেকেই পর্যটকদের লম্বা সারি দেখা গেছে।
লাউয়াছড়ার ট্যুর গাইড সাজু মারচিয়াং জানান, সকাল থেকেই পর্যটকদের যে ভিড় তাতে রেকর্ড পর্যটকের দেখা মিলবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।
ঢাকা থেকে সপরিবারে এসেছেন ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান। তিনি জানান, প্রতিবার এসেই রুম বুকিং দেই। আজ এসে কোথাও রুম পাইনি তাই বাধ্যহয়ে শ্রীমঙ্গল থেকে ২৫ কিমি দূরে মৌলভীবাজার শহরের একটি হোটেলে উঠেছি।
পর্যটন কেন্দ্র লাউয়াছড়া এলাকায় কথা হয় আলেয়া খাতুন নামে এক পর্যটকের সঙ্গে। তিনি জানান, চট্রগ্রাম থেকে পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব মিলে সাতজনের দল নিয়ে এই প্রথমবারের মতো মৌলভীবাজার ঘুরতে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘ছেলেমেয়েদের পরীক্ষা শেষ। তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে বেড়াতে এসেছি।’
আমার বাড়ি রিসোর্টের এমডি সজল দাশ বলেন, আমাদের রিসোর্টের কোনও রুম খালি নেই। পরিচিত অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে, কিছু করার নেই। নিজে না পারলেও অন্য রিসোর্টে চেষ্টা করেছি, এখন কোথাও খালি নেই। ৩ দিনের ছুটি একসাথে হওয়ায় রেকর্ড পর্যটক এসেছেন।
হোটেল রিসোর্টের সূত্রে জানা যায়, আবাসিক হোটেল ও রিসোর্টগুলোতে কোনো রুম খালি নেই। ১০ থেকে ১৫ দিন আগেই বুক হয়ে গেছে প্রায় প্রতিটি রুম। শ্রীমঙ্গলের ৭০টি হোটেল ও রিসোর্ট কর্তৃপক্ষ তাদের সব রুম অগ্রিম বুকিং দিয়ে রেখেছে।
শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থা বলছে, হোটেল রিসোর্টগুলো আগে থেকেই শতভাগ বুক হয়ে গেছে। শেষ সময়ে এসে অনেকেই কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে রুম নিতে আগ্রহী হলেও পাচ্ছেন না।
শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শামছুল হক জানান, কোনো রিসোর্ট খালি নাই। গত একসপ্তাহ থেকে শত শত ফোন রিসিভ করে একই কথা বলতে বলতে হাঁপিয়ে উঠছি। মাফ চেয়েছি, আমার নিজেরও একটি ইকো রিসোর্ট রয়েছে। এটিও প্রায় ১৫ দিন আগে থেকেই বুকিং হয়ে গেছে।
এদিকে জেলায় বিপুলসংখ্যক পর্যটকের নিরাপত্তায় সতর্ক পুলিশ প্রশাসনও। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাসের রিকবদার জানান, এই ছুটিতে অনেক পর্যটক আসবেন সেই ধারণা থেকে আমাদের আলাদা প্রস্তুতি রয়েছে। পর্যটন কেন্দ্রে টুরিস্ট পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকবে তাদের সাথে সমন্বয় করে পর্যটকরা যেন নিরাপদে ঘুরতে পারেন সেজন্য সব ধরনের নিরাপত্তা দিতে আমরা সতর্ক।