মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের বিরইনতলা গ্রামে জালিয়াতির মাধ্যমে জমি দখল করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। জমি দখলসহ বিক্রির অভিযোগ আদালতে মামলাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী বিরইনতলা গ্রামের মৃত সজ্জাদ আলী ছেলে তফজ্জুল রহমান বকুল মিয়া (৪৫)।
অভিযোগকারী বকুল মিয়া জানান, বকুল মিয়ার দাদা মৃত ছমেদ আলী ও দাদি মন্ত বিবি, বকুল মিয়ার পিতা সজ্জাদ আলী এবং চাচা মোছন মিয়া (৬০), দছির আলী (৭৫) ও ওয়ারিছ আলীর (৬৫) নামে প্রায় ৮৫ বিঘা জমি ছিল। ২০০৭ সালে সজ্জাদ আলীর মৃত্যুর সময় তিন পুত্র ও এক কন্যাসন্তান রেখে গেলে পরিবারটি অসহায় পড়ে। এ সুযোগে চাচা মোছন মিয়া ২০০৮ সালে প্রবাস থেকে এসে তার ভাই দছির আলী ও ওয়ারিছ আলীকে নিয়ে বিভিন্ন সময় জাল দলিল তৈরি করে বিরইনতলা মৌজার বিভিন্ন দাগের বকুল মিয়ার পৈতৃক সম্পত্তি দখল ও বিক্রি করতে থাকেন। মোছন আলী তার স্ত্রী রাবেয়া বেগমের নামে জাল দলিল তৈরি করে সাড়ে তিন একর জমি দখল করে নেন। অতি সম্প্রতি বকুল মিয়ার দাদি মন্ত বিবির নামে দলিলকৃত ২০ শতক জমি জালিয়াতি করে বিক্রি করে দেন মোছন আলীসহ তার চাচারা। বকুল মিয়া এর প্রতিবাদ করলে তাকে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করা হয়।
বকুল মিয়া তার পৈতৃক সম্পত্তি ফিরে পেতে ২০১০ সালে কুলাউড়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা (নম্বর-১০৭) দায়ের করেন। মামলাটি বিচারাধীন থাকা অবস্থায় জাল দলিলের মাধ্যমে জমি বিক্রি ও দখলের বিষয়ে ভুক্তভোগী বকুল মিয়া ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা রেজিস্ট্রার, দুর্নীতি দমন কমিশন, জুড়ী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও সিনিয়র সহকারী জজ আদালত কুলাউড়া বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না বলে জানান। এ সম্পত্তি নিয়ে ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদে একাধিকবার বিচার-সালিশের পরও সমাধান না হওয়ায় ন্যায়বিচারের জন্য এখন দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ভুক্তভোগী বকুল।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফুলতলার একজন প্রবীণ দলিল লেখক বলেন, বিচার-সালিশে আমিও কয়েকবার উপস্থিত ছিলাম। বকুল মিয়ার পরিবারটি অসহায় হওয়ায় শালিস বৈঠকের রায় না মেনে বিভিন্ন সময় জাল দলিল করে জমি বিক্রি করে দিচ্ছেন অভিযুক্তরা।
অভিযোগের বিষয়ে মোছন আলী মুঠোফোনে বলেন, বকুল মিয়ার অভিযোগ সত্য নয়। আমার স্ত্রীর নামে আমি জায়গা ক্রয় করেছি। কোনো জাল দলিল করা হয়নি।