ঢাকা টেস্টের তৃতীয় দিন চালকের আসনে বসতে প্রথম সেশনের চ্যালেঞ্জটা নিতে হতো বাংলাদেশের। কিন্তু ব্যাটারদের ব্যর্থতায় দিনের প্রথম সেশনটা দখলে ছিল ভারতীয় বোলারদের। ২৭ ওভারে ৬৪ রান যোগ করতেই স্বাগতিক দল ৪ উইকেট হারিয়েছে। লাঞ্চ বিরতি থেকে ফিরে লিড নিতে পারলেও কাঙ্ক্ষিত প্রতিরোধ গড়তে পারেনি দ্বিতীয় সেশনেও। ফিফটি করা জাকির হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজের বিদায়ে বিপদ বেড়েছে আরও।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪৭ ওভারে ৬ উইকেটে ১২৫ রান। ক্রিজে আছেন লিটন দাস (২৮) ও নুরুল হাসান হাসান (১১)। বাংলাদেশের লিড ৩৮ রান।
৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা বাংলাদেশের দুই ওপেনারকে আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছিল। দ্বিতীয় বলেই আসে প্রথম বাউন্ডারি। তাদের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করতে সকালের দ্বিতীয় ওভারটি করতে আসেন অভিজ্ঞ অফস্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। এসেই প্রমাণ করেন নিজের কার্যকারিতা। শেষ বলটিতে শান্তকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে আউট করেছেন। অবশ্য আগের ডেলিভারিতেও এলবিডাব্লিউর আবেদন হয়েছিল। আম্পায়ার আঙুল না তুললে ভারত রিভিউ নেয়। সাফল্য আসেনি যদিও। আগের ইনিংসে ২৪ রান করা নাজমুল হোসেন এবার ফিরেছেন ৫ রানে।
আগের ইনিংসে প্রতিরোধ গড়া মুমিনুল এবারের কয়েক ওভারই টিকতে পেরেছেন। সিরাজের লেংথ বল বুঝতে না পারায় ব্যাটের কানায় বল লেগে গ্লাভসবন্দি হয়েছেন ৫ রানে।
প্রথম ঘণ্টায় দুই উইকেট হারানোর পর সাকিব-জাকির মিলে জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন। ২৫ রানও যোগ করেন তারা। কিন্তু শক্ত প্রতিরোধ গড়ার আগেই জুটি ভাঙে সাকিবের বাজে শট সিলেকশনে। উনাদকাটের লেংথ বলে হালকা পুশ করে ক্যাচ উঠিয়ে দিয়েছেন এক্সট্রা কাভারে। সাকিবের ক্যাচ নিয়েছেন গিল। বাংলাদেশ অধিনায়ক ৩৬ বল খেললেও ১৩ রান করতে পারেন মাত্র।
৫১ রানে তিন উইকেট হারানোর পর লাঞ্চের আগে দলের ভরসা হয়ে উঠতে পারেননি অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমও। অক্ষর প্যাটেলের ঘূর্ণি বল তিনি ব্যাক ফুটে ডিফেন্ড করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বল বেশি ভেতরে ঢুকে পড়ায় এলবিডাব্লিউ হতে হয় মুশফিককে। রিভিউ নিয়েও সাফল্য পাননি। ১৯ বল খেলা এই ব্যাটার ৯ রানে আউট হয়েছেন।
অভিজ্ঞদের ব্যর্থতার দিনে শুধু একপ্রান্ত আগলে খেলেছেন জাকির হাসান। চট্টগ্রাম টেস্টের সেঞ্চুরিয়ান এই টেস্টেও প্রথম হাফসেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। লিটনকে নিয়ে ৩২ রান যোগ করে ইনিংসে এগিয়ে যেতেও অবদান রাখেন তিনি। কিন্তু হাফসেঞ্চুরির পরই শট খেলার তাড়নায় উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন। উমেশ যাদবের বলে কাট করতে গিয়ে ডিপ থার্ডে ক্যাচ দিয়েছেন সিরাজকে। তাতে ১৩৫ বল খেলা জাকিরকে ৫১ রানে থামতে হয়েছে।
জাকিরকে থামানোর পর মেহেদী হাসান মিরাজকেও এলবিডাব্লিউ করে বাংলাদেশকে কোণঠাসা করে ছাড়েন অক্ষর প্যাটেল। অবশ্য তার আগে লিটনকেও ফেরানোর সুযোগ হতাছাড়া না করলে অবস্থা আরও শোচনীয় হতে পারতো স্বাগতিকদের। অক্ষরের ঘূর্ণিতেই স্লিপে দুইবার ক্যাচ উঠেছিল লিটনের। কিন্তু কোহলি সেটি নিতে পারেননি।
দ্বিতীয় দিন ঋষভ পান্ত-শ্রেয়াস আইয়ারের ১৫৯ রানের বিশাল জুটিতে ৮৭ রানের লিড পেয়েছে ভারতীয় দল। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশকে ২২৭ রানে গুটিয়ে দিয়ে জবাবে সফরকারীরা প্রথম ইনিংসে ৩১৪ রান সংগ্রহ করেছে।