জমে উঠেছে বিশ্বনাথের ঈদ বাজার, চড়া দামে ক্রেতারা হতাশ!

আর মাত্র ক’দিন পরেই ঈদ, ঈদের বাজার প্রস্তুত। মার্কেট বিপনিবিতানজুড়ে ক্রেতাদের ভিড়। আছে পছন্দের পোশাকও। তবে ঈদবাজার চড়া থাকায় ব্যবসায়ীদের পৌষমাস থাকলেও হতাশ ক্রেতারা। অতিমাত্রায় মূল্যের কারণে ক্রেতারা এ মার্কেট থেকে ও’মার্কেট ঘুরছেন। পরে সাধ আর সাধ্যের সম্মীলন হলে কাপড় কিনছেন। না হলে ফেরত যাচ্ছেন আবার ঈদবাজারে আসবেন বলে।

দেশের সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রেরণ করার কারণে প্রবাসি অধ্যুষিত সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলাকেই বলা হয়ে থাকে লন্ডন শহর। ঈদ আসলেই দেশে থাকা স্বজনদের জন্য রেমিটেন্স পাঠান প্রবাসিরা। ব্যতিক্রম হয়নি এবারো। তবে বাজারে গিয়ে মূল্য দেখে হতাশ হচ্ছেন অনেকে।

বিশ্বনাথের অধিকাংশ ব্যবসায়ী সারা বছর চেয়ে থাকেন ঈদ বাজারের জন্য। ব্যতিক্রম হয়নি এবারও। ঈদকে সামনে রেখে সারা বছরের মন্দাভাব কাটাতে প্রচুর পরিমাণ মূলধন খাটিয়েছেন বিশ্বনাথের ব্যবসায়ীরা। সবমিলিয়ে তারা ঈদ আয়োজনের মহাযজ্ঞে শামিল হতে প্রস্তুত। উপজেলার প্রতিটি মার্কেট ঘুরে দেখা যায় প্রতিটি শপিংমল, বেলুন ও রঙ্গিন বাতিতে সাজানো। ক্রেতারদের উপস্থিতিও জমজমাট।

বিশ্বনাথ উপজেলার আল হেরা মার্কেট আর স্থানীয় বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিবছর রমযানের শুরু থেকে ঈদ বাজারের প্রভাব দেখা দেয়। কিন্তু গত বছর তার উল্টো ছিল। কেনাবেচায় ধ্বস নামছিল। এবার গত বছরের লস কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে তারা জানান।

সরেজমিন বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, কেনাকাটার আবহ বইছে। বেশিরভাগ দোকানে ক্রেতাদের ভিড় জমে আছে। অনেক ক্রেতা ঘুরছেন এক মার্কেট থেকে আরেক মার্কেট। কিন্তু দামে সন্তুষ্ট নন বেশিরভাগই।

কেউকেউ অভিযোগ করে বলেন, মার্কেটে ঈদের সময় আসলেই জুতার দাম বেশি হয়ে যায়। জামদানী শাড়ী, থ্রি-পিস, শার্ট, পেন্ট, শিশুদের পোশাকসহ বিভিন্ন পোশাক সামগ্রীর দাম আকাশ ছোঁয়া।

এ বিষয়ে ক্রেতা কাওছার আহমদ বলেন, ‘আমরা ঈদ আসলেই অপেক্ষায় থাকি পরিবারের সবাইকে নিয়ে কেনাকাটা করবো। কিন্তু ঈদের সময় ব্যবসায়ীরা দাম বেশি হাঁকেন। ঈদের সময় যেন ব্যবসায়ীরা ১১ মাসের মুনাফা তুলে নিতে চান। যা দেখার কেউ নেই।’

অনেক ব্যবসায়ী এমন অভিযোগ স্বীকারও করছেন। তারা বলেছেন, এবার ঈদ পণ্যের দাম আগের বারের থেকে অনেক বেশি। ঈদের বাজারে দাম ঠিক রাখার উপায় নেই। চাহিদা ও পছন্দ অনুযায়ী বেচাকেনা হয়।

এদিকে প্রতি বছরের ন্যায় এবার স্বল্প আয়ের মানুষের ফুটপাতই ভরসা। ফুটপাত থেকে কম দামে কাপড় কিনে পরিবার পরিজনের মুখে হাসি ফোটাচ্ছেন।

বিশ্বনাথের পুরানবাজারের কাপড় আমদানিকারক প্রতিস্থান ব্লাক ডায়মন্ড এর প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা রিয়াজুল ইসলাম জানান, দেশি কাপড়ের চাহিদা অনেক কম হওয়ায় বাজারে আমাদের দেশীয় কাপড়ের ব্যবসা অনেক কমে গেছে। তবে আমরা আশাবাদী এবার ঈদে ব্যবসা ভালো হবে।

কোন কাপড়ের চাহিদা বেশি জানতে চাইলে এ ব্যবসায়ী জানান, দামে বেশি বিদেশি ভারতের সারারা, গারারা, রারাসহ বিভিন্ন নামের চায়না কাপড়ের চাহিদা একটু বেশি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্বনাথ পুরানবাজারের বণিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন জানান, ঈদ বাজারে কাস্টমারদের আকৃষ্ট করতে হলে প্রতিটি মার্কেটে ঈদের পরিবেশ থাকতে হবে। শুধু ব্যবসা করলেই হবে না, প্রতিটি মার্কেটের মূল ফটক ও ভিতরে ডেকোরেশন করে সাজাতে হবে।