আজ ১৫ জুন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রথম মেয়র, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মরহুম জননেতা বদর উদ্দিন আহমদ কামরান এর ২য় মৃত্যুবার্ষিকী।
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. জাকির হোসেন তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, বদর উদ্দিন আহমদ কামরান একটি নাম, একটি ইতিহাস। পৌরসভার কমিশনার থেকে সিসিক’র প্রথম মেয়র। তিনি রাজনীতি ও জনপ্রতিনিধির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। ২০০৩ সালে সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনে প্রথম মেয়র নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন। ২০২০ সালে কভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে অকালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু অকালে মৃত্যুবরণ করলেও তিনি জনতার কামরান হিসাবেই সবার স্মৃতিতে চির অম্লান হয়ে থাকবেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, কামরান ভাইয়ের সাথে অনেক স্মৃতি রয়েছে। যা স্মৃতিতে এখনো জ্বলমল করে ভেসে ওঠে। সদা হাস্যজ্জ্বল, সরল প্রকৃতির অমায়িক ব্যবহার দিয়ে তিনি জয় করে নিয়েছিলেন সাধারণ মানুষসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের হৃদয়।
তিনি তাঁর কর্মময় জীবন দিয়ে হয়ে উঠেছিলেন ‘জনতার কামরান’। তিনি নগরীর আনাচেকানাচে প্রতিটি কোণায় চষে বেড়িয়েছেন। সাধারণ মানুষের সাথে ছিল তাঁর নিবিড় সম্পর্ক। সবাই তাঁর আচার-আচরণ, মায়া-মমতা ও ভালোবাসার কারণে আত্মার আত্মীয় হয়ে ওঠেছিলেন। সত্যিই এমন জনবান্ধব জননেতা খুঁজে পাওয়া দুষ্প্রাপ্য।
নেতৃবৃন্দ বলেন, জননেতা বদর উদ্দিন আহমদ কামরান দীর্ঘদিন মহানগর আওয়ামী লীগকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। প্রতিটি ওয়ার্ডকে সুসংগঠিত করার জন্য কাজ করেছিলেন। মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ যখনই কোনো সমস্যায় পড়তেন তখনই সমস্যা সমাধানের জন্য তাঁর কাছে যেতেন। তাঁর মিষ্টভাষী বক্তব্য ও কনভিন্স ক্ষমতার জন্য যে কোনো সিদ্ধান্ত নেতৃবৃন্দ মেনে নিতেন। সর্বোপরি তিনি সবার অভিভাবক ও প্রিয় নেতা হয়ে উঠেছিলেন। তিনি শুধু মহানগর আওয়ামী লীগ নয় সিলেট বিভাগের প্রতিটি জেলা চষে বেড়িয়েছেন। যেখানে নৌকার প্রার্থী ছিল সেখানেই তিনি উপস্থিত হতেন এবং জনসভায় বক্তব্য রাখতেন। এভাবেই করেই তিনি সিলেটের গন্ডি পেরিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
প্রকৃতপক্ষে কামরান ভাই ছিলেন একজন অসাম্প্রদায়িক মানুষ। সকল ধর্মের মানুষের সাথে তাঁর সুসম্পর্ক ছিলো। সুসম্পর্কের কারণে তিনি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সব বিবাহ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করতেন। সে জন্য সবাই তাকে আপন করে নিতেন। ধর্মীয়,ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে নগরীর প্রতিটি সামাজিক অনুষ্ঠানে তিনি অংশগ্রহণ করতেন। এভাবেই তিনি জনতার মেয়র হয়ে উঠেছিলেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘আজ যে উন্নয়নের নগরী দেখছি। এই সব উন্নয়ন কামরান ভাইয়ের হাত ধরেই শুরু হয়েছিলো। নগরীর প্রতিটি জয়াগায় বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের উন্নয়নের ছোঁয়া রয়েছে। একটি উন্নত সমৃদ্ধ, ডিজিটাল, সন্ত্রাস মুক্ত নগরী গড়তে তাঁর স্বপ্ন ছিলো। তাঁর পুরো স্বপ্ন পূরণের আগেই তিনি সবাইকে চোখের জ্বলে ভাসিয়ে পরোপারে চলে গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে সিলেটের একটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের পতন হলো। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন ফেরিওয়ালা ও একজন অভিভাবককে হারালাম। মহানগর আওয়ামী লীগসহ পুরো রাজনীতিতে তাঁর শূন্যতা পূরণ হবার নয়। দোয়া করি, মহান আল্লাহপাক যেন প্রিয় এই নেতাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করেন, আমীন।’
উল্লেখ্য, মহানগর আওয়ামী লীগ তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- দুপুর সাড়ে ১২ টায় মানিক পীর টিলাস্থ মরহুমের কবর জিয়ারত এবং প্রত্যেকটি ওয়ার্ডের মসজিদে বাদ জোহর মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন। নেতৃবৃন্দ প্রিয় নেতা মরহুম কামরানের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং তাঁর প্রতি মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।