দেশে জঙ্গি হামলার আশঙ্কা রয়েছে। এমন প্রতিবেদন দিয়েছে একটি গোয়েন্দা সংস্থা। এর মধ্যে নিজেদের কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এমন অবস্থায় রাজধানীতে কূটনৈতিক এলাকা, বিভিন্ন গির্জা, মিশনারি ও বিদেশি স্থাপনার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
একই সঙ্গে সিলেটসহ দেশের সকল জেলায় অবস্থানরত বিদেশিদের তালিকা করে তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। এ বিষয়ে জেলা পুলিশ ও মেট্রোপলিটন পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
জেলায় জেলায় বিদেশি নাগরিকদের তালিকা করে ২০১৬ ও ২০১৭ সালের মতো জঙ্গিরা বিদেশি নাগরিকদের টার্গেট করেছে বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পশ্চিমা নাগরিকদের ওপর হামলার আশঙ্কা বেশি। আল-কায়েদার অনুসারী ও দেশীয় জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ ফের বিদেশি নাগরিক ও মিশনারি টার্গেট করে হামলা করতে পারে বলে একটি গোয়েন্দা সংস্থা তাদের প্রতিবেদনে দাবি করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জঙ্গিরা সিলেটের পাহাড়ি এলাকা এবং কিশোরগঞ্জের আশপাশে একটি খ্রিস্টান মিশনারি স্থাপনায় হামলা করার সম্ভাব্য হুমকি রয়েছে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনের পর পুলিশ সদর দপ্তর বিদেশিদের তালিকা করে পুলিশ সুপারদের (এসপি) নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে। গত ১৯ ডিসেম্বর এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তর সকল জেলা পুলিশ ও মেট্রোপলিটন পুলিশকে সতর্ক করেছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র জানিয়েছে, যেসব বিদেশি মিশনারি বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে, তাদের নিরাপত্তার জন্য জেলা পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মিশনারির আশপাশে সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। বিদেশি মিশনারিতে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের চলাচলের পথে নজর রাখছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এ ব্যাপারে সিলেটের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমরা চা-বাগান, বিদেশি নাগরিক ও পাহাড়কেন্দ্রিক নিরাপত্তা জোরদার করেছি। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। পুলিশ সদর দপ্তর যেসব নির্দেশনা দিয়েছে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।’
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের কূটনীতিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশের পর রাজধানীর কূটনৈতিকপাড়ার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। কূটনীতিকদের বাসাবাড়িতেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি কূটনীতিকদের চলাচলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সূত্রটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে কিছু গোয়েন্দা তথ্য দিয়েছে, তা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকেও নিরাপত্তার বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। কূটনীতিকেরা যাতে নিরাপদ বোধ করেন, সে অনুযায়ী নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনের পর প্রতিটি জেলার বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়, গির্জা, মন্দিরের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। হামলা হতে পারে এমন সকল জায়গা ও স্থাপনায় গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।