নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য আফজাল হোসেন ওরফে লিমনকে (৩৮) গ্রেপ্তার করেছে এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। তিনি দীর্ঘ সাত বছর ধরে পলাতক ছিলেন।
জেএমবির রংপুর বিভাগের সামরিক শাখা প্রধান জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজিব গান্ধী এবং দাওয়াহ শাখার প্রধান সাদ ওরফে রতনের একান্ত সহযোগী ছিলেন আফজাল। ২০১৩ সালে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানায় দায়ের করা বিচারাধীন মামলার পলাতক আসামি তিনি।
এটিইউ’র একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার (১০ আগস্ট) রাতে নরসিংদীর মাধবদী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
এন্টি টেররিজম ইউনিটের (মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইং) পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসলাম খান বলেন, ২০১৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধার বুজরুক বোয়ালিয়া শিল্পপাড়া এলাকায় জেএমবির কিছু সক্রিয় সদস্য গোপন বৈঠক করছিলেন। সেখানে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযান চলাকালে আফজাল হোসেন ওরফে লিমন কৌশলে পালিয়ে যান। এরপর দীর্ঘ ৭ বছর নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। তিনি জঙ্গিবাদের বিস্তার এবং অংশগ্রহণসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, রাজীব গান্ধী নব্য জেএমবির শীর্ষ নেতা হলেও জঙ্গিবাদের সঙ্গে তার যোগসাজশ পুরাতন জেএমবি থেকেই। জেএমবির মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শীর্ষস্থানীয় নেতা আব্দুল আউয়ালের বাবুর্চির কাজ করতেন। তিনি আব্দুল আউয়ালের নানা বার্তা আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছে দেয়ার কাজও করতেন। আর এই আব্দুল আউয়াল ছিলেন জেএমবির প্রধান নেতা মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত শায়খ আব্দুর রহমানের মেয়ের জামাই।
বিগত দশকে শায়খ রহমান ও আব্দুল আউয়ালসহ শীর্ষ জেএমবি নেতাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। এরপর কিছুদিন বিরতির পর নব্য জেএমবি হিসেবে পুনর্গঠিত এই গোষ্ঠীটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় আসেন জাহাঙ্গীর আলম। নিহত নব্য জেএমবির প্রধান তামিম চৌধুরীর সহযোগী ছিলেন রাজিব গান্ধি। আর পুরাতন জেএমবির রংপুর বিভাগের দায়িত্ব পালনকালে তার সহযোগী ছিলেন গ্রেপ্তার আফজাল।
জেএমবিতে আফজালের সম্পৃক্ততা সম্পর্কে পুলিশ সুপার আসলাম বলেন, ২০১৪ সাল থেকে গাইবান্ধা জেলার জেএমবির দাওয়াহ শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন আফজাল। সেসময় জেএমবি’র রংপুর বিভাগের সামরিক শাখা প্রধান ছিলেন জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজিব গান্ধী এবং দাওয়াহ শাখার প্রধান ছিলেন সাদ ওরফে রতন। দুজনেরই একান্ত সহযোগী ভূমিকায় ছিলেন আফজাল।
২০১৬ সালে তিনি চট্টগ্রামে নাশকতার পরিকল্পনা করেছিলেন। এন্টি টেররিজম ইউনিট তার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে দীর্ঘদিন ধরে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।