জগন্নাথপুরে ১৬ প্রাথমিক শিক্ষকের নামে বিভাগীয় মামলা

দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় জগন্নাথপুরের বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৬ শিক্ষকের নামে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে ওই শিক্ষকেরা বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার ফলে পাঠদান ব্যাহত হওয়ায় সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা অনুযায়ী এ মামলা করা হয়। ছুটি না নিয়ে উপজেলায় প্রায় ২৫/৩০ জন শিক্ষক লন্ডন চলে গেছে বলে জানা যায়। এর মধ্যে ১৬ জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি। এনিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জের সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহবুব জামান।

তিনি বলেন, ‘অভিযুক্ত ১৭ জন শিক্ষকের মধ্যে ১৬ জনের বিরুদ্ধে গত ২৪ অক্টোবর বিভাগীয় মামলা হয়েছে। অপর একজনের অনুপস্থিতের দুই মাস না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা যায়নি। তবে সবার বেতন বন্ধ আছে এবং সরকারি চাকরির বিধিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’

মামলা হওয়া শিক্ষকেরা হলেন—কাওছার হামিদ, আফছানা খানম আন্নি, সৈয়দ ফুয়াদুস সালেহীন, শেরা আলী, নাছরিন জাহান শাহী, শামীমা বেগম, সাজিয়া খানম, শহিদুর রহমান, ইয়াছমিন বেগম, রোকশানা বেগম, শিপন সূত্রধর, রেবী বেগম, রাবিয়া বেগম, উম্মে হানিফা মিলি, ওলিউর রহমান সামি ও এসএম আশা হক। তার সবাই উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত ছিলেন।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ওই শিক্ষকেরা বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ সাধারণ ৩-৪ দিনের ছুটি, কেউ বা আবার চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাবেন বলে মাসখানেকের ছুটিও নিয়েছিলেন। কিন্তু ছুটি শেষ হলেও তারা আর বিদ্যালয়ে যোগদান করেননি। অনেকে আবার কোনো ছুটি না নিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। কেন তারা পাঠদানে যোগদান করছেন না; কয়েক দফা চিঠি দিলেও তার কোনো জবাব পায়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই ১৬ জন শিক্ষক বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। এর মধ্যে বেশির ভাগ শিক্ষক যুক্তরাজ্যে সপরিবারে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।

এ বিষয়ে সালদীঘা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমার বিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষকের মধ্যে দুজন অনুপস্থিত। একজন এক মাসের ছুটি নিয়েছিলেন। অপরজন বিয়ের জন্য মৌখিক ৭ দিনের ছুটি নেন। শুনেছি তারা এখন বিদেশে আছেন। দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত থাকায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।’

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, উপজেলার প্রায় ২৫/৩০ শিক্ষক ও শিক্ষিকা ছুটি না নিয়ে বিদেশে রয়েছেন। এনিয়ে পাঠদানে সমস্যা হচ্ছে, ছাত্র-ছাত্রীদের লেখা পড়ার ক্ষতি হচ্ছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মানিক চন্দ্র দাশ বলেন, ‘গত ৪ অক্টোবর উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ১৭ জন শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার জন্য জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।’