সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে পাওনা টাকাকে কেন্দ্র করে খানপুর গ্রামের হিন্দু পাড়ায় হামলা ও মন্দিরে ঢুকে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনার জের ধরে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন গ্রামটির হিন্দু বাসিন্দারা। হামলা ঠেকাতে রাতজেগে গ্রাম পাহারা দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তারা।
হামলা ও ভাংচুর মামলার আসামীরা জামিনে বের হয়ে আবারও হামলার প্রকাশ্য হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ গ্রামবাসীর। হুমকির পর থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে এবং গ্রামটিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গত ১৪ এপ্রিল উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের খানপুর গ্রামের চন্দন দাসের কাছে সুদের পাওনা পাওনা ১৩শত টাকা নিয়ে কথাকাটাকাটি হয় পাওনাদার খলিল মিয়া ও হান্নান মিয়ার সাথে।
এর জের ধরে রাত ৯টার দিকে খলিল ও হান্নানের নেতৃত্বে ১৫/২০জন ব্যক্তি চন্দন দাসের বাড়িসহ আশেপাশের হিন্দু বাড়িতে হামলা চালান এবং পারিবারিক মন্দিরে ঢুকে প্রতিমা ভাংচুর করেন। এ সময় অন্তত ১০জন গ্রামবাসী আহত হন।
হামলার ঘটনার পর চন্দন দাস বাদী হয়ে হান্নান কে প্রধান আসামী করে ১৪ জনের বিরুদ্ধে জগন্নাথপুর থানায় মামলা দায়ের করা হলে পুলিশ হান্নান ও খলিলসহ ৭জনকে গ্রেপ্তার করে। পরে আদালত থেকে জামিনে বের হয়ে আসেন আসামীরা।
জামিনে বের হওয়ার পর থেকেই চন্দন দাসের পরিবারকে প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছেন হান্নান ও তার পরিবারের সদস্যরা। এছাড়াও গ্রামে হামলা ও হত্যার হুমকিও দেয়া হয়েছে।
প্রথমবার হুমকি দেয়ার পর ১৮ এপ্রিল জগন্নাথপুর থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেন একই গ্রামের মতিলাল দাস।
গ্রামবাসী জানান, হামলার আশঙ্কায় গ্রামের বিবাহযোগ্য মেয়েদের নিরাপত্তা বিবেচনায় তাদের অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। মূল্যবান জিনিসপত্রও ইতিমধ্যে সরিয়ে নিয়েছেন গ্রামবাসী।
চন্দন দাস বলেন, আমাদের উপর প্রতিনিয়ত হুমকি দেয়া হচ্ছে। কাল (২৯ এপ্রিল) সকালেও হুমকি দেয়া হয়েছে মামলা তুলে না নিলে আবার হামলা হবে, নির্বংশ করে দেয়া হবে, দেশে হিন্দু রাখা হবে না ইত্যাদি বলে।‘
গ্রামের আরেক বাসিন্দা কাঞ্চন দাস বলেন, ‘মামলার আসামীরা জেল থেকে জামিনে বের হয়ে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন হামলার। ভয়ে বাড়িঘরে ছেলেমেয়েদের রাখতে পারছি না।‘
এ প্রসঙ্গে জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুর ইসলাম বলেন, ‘আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। হিন্দু পরিবারের উপর হামলা হতে দেব না। আমাদের পুলিশ পাহারা আছে আর টহল পুলিশও প্রতিদিন টহলে আছেন।‘
যোগাযোগ করা হলে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের জগন্নাথপুর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার শুভাশিস ধর বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।‘