সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর নলুয়ার হাওরে বেড়িবাঁধের কাজে ব্যবহৃত একটি মাটিকাটার এস্কেভেটর পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে প্রায় ৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। মেশিন পুড়ে যাওয়ায় প্রকল্পের মাটিকাটার কাজ বন্ধ রয়েছে।
জানা গেছে, জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের কান্দারগাঁও এবং নোয়াগাঁও গ্রামের মধ্যস্থান অংশে স্থানীয় কামারখালী নদীর পাড়ে ৭ লাখ ৭৯ হাজার টাকা ব্যয়ে ১নং পিআইসি প্রকল্পের মাধ্যমে হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে নোয়াগাঁও গ্রামের আব্দুল রহিমের পুত্র শফরুল ইসলাম ও সমসু মিয়ার পুত্র সুজন মিয়া হাওরে গিয়ে পিআইসি সদস্য সচিব ওবায়েদুর রহমান তালুকদারকে মাটিকাটার কাজ বন্ধ রাখার জন্য বলেন। বাঁধা পাওয়ার পর ওইদিন মেশিন দিয়ে মাটিকাটার কাজ বন্ধ রাখা হয়। রাতে মেশিনটি নোয়াগাঁও গ্রামের পাশে রাখা হয় এবং মেশিনটি পাহারা দেয়ার জন্য নোয়াগাঁও গ্রামের আব্দুল খালেদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এ অবস্থায় আব্দুল খালেদকে ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে দুর্বৃত্তরা মারপিঠ করে এস্কেভেটরে পেট্রোল জাতীয় পদার্থ ঢেলে দিয়ে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায়।
পাহাড়াদার আব্দুল খালেদকে আহত অবস্থায় জগন্নাথপুর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় বেড়িবাঁধ প্রকল্পের সদস্য সচিব ওবায়েদুর রহমান তালুকদার মুকুল বাদী হয়ে শফরুল ইসলাম, সুজন মিয়াসহ দুইজনকে আসামি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
পাহারাদার আব্দুল খালেদ বলেন, রাতে ২/৩ জন লোক এসে আমাকে মারপিট শুরু করে পরে গাড়িতে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়।
পিআইসি কমিটির সভাপতি মাস্টার মিজানুর রহমান ‘বেড়িবাঁধের কাজ চলছিলো। নোয়াগাঁও গ্রামে মেশিনটি রাখা ছিলো।দুর্বৃত্তরা পাহারাদারকে মারপিট করে এস্কেভেটরে আগুন লাগিয়ে দেয়।’
সদস্য সচিব ওবায়েদুর রহমান তালুকদার মুকুল বলেন, বেড়িবাঁধে এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে মাটিকাটার কাজ করে রাতে মেশিন নোয়াগাঁও গ্রামের পাশে রাখা হয়। নোয়াগাঁও গ্রামের আব্দুল খালেদ পাহারাদার দেওয়া হয়। সকালে আমাদেরকে কাজ বন্ধ রাখার কথা বলা হয় এবং চাঁদা দাবি করা হয়। ওই রাতে পেট্রোল জাতীয় পদার্থ ঢেলে দিয়ে আগুন লাগিয়ে মেশিনটি পুড়ানো হয়। খবর পেয়ে রাতে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে হাওরে গিয়ে দেখা যায়, আগুনে মেশিনটির অধিকাংশ পুড়ে গেছে।
এস্কেভেটর মেশিনের মালিক ছাতক উপজেলার কালারুকা ইউপি সদস্য নজর আমিন জানান, মেশিনটি পুড়ে প্রায় ৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের জগন্নাথপুর উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) মোহাম্মদ হাসান গাজী বলেন, এস্কেভেটর মেশিনটি পুড়ে যাওয়ার কারণে আপাতত কাজ বন্ধ রয়েছে। মেশিন পুড়ানোর সাথে জড়িত দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, এখানে বিকল্প ব্যবস্থায় মাটিকাটা হবে। কাজ থেমে যাবে না।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’