সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় বন্যার কারণে আউশ ধানের চাষাবাদ বিঘ্নিত হয়েছে। বন্যায় বীজতলা তলিয়ে যাওয়ায় এবার উপজেলায় আউশ ধান চাষাবাদ হয়নি। ফলে আউশ ধান চাষাবাদকারী কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের মজিদপুর গ্রামের কৃষক মুজিবুর রহমান জানান, তিনি ৫ কেদার জমিতে আউশ ধান চাষাবাদ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বীজতলা তৈরি করেন। গত ১৭ জুনের ভয়াবহ বন্যায় আউশ ধানের বীজতলা তলিয়ে যায়। ফলে এবার আউশ ধান চাষাবাদ করতে পারেননি।
মীরপুর ইউনিয়নের মীরপুর গ্রামের কৃষক জামাল উদ্দিন বলেন, আমার ৭ কেদার জমিতে শুধু আউশ ধান চাষাবাদ করা হয়। এবার দুই দফা বীজতলা তৈরি করেছিলাম। কিন্তু বন্যার কারণে বীজতলা তলিয়ে যাওয়ায় আউশ ধান চাষাবাদ করতে পারিনি। আউশ ধান চাষাবাদের ওপর আমার পরিবারের পুরো বছরের খাবার জোগাড় হয়ে থাকে। তাই এবার আমি খুব বিপদে আছি।
কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, জগন্নাথপুর উপজেলায় ৩ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে প্রথম দফা ৫৩০ হেক্টর ও দ্বিতীয় দফা ১৫০ হেক্টর বীজতলা তৈরি করা হয়। দুই দফা বন্যায় সব বীজতলা তলিয়ে যায়।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন জগন্নাথপুর উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আউশ ধান চাষাবাদের জন্য বৈশাখ মাসে বীজতলা তৈরি করা হয়। জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ দিকে চারা জমিতে রোপণ করা হয়। ভাদ্র মাসে ফসল কর্তন করা হয়। এবার জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ দিকে বন্যার কারণে বীজতলা তলিয়ে যাওয়ায় আউশ ধান চাষাবাদ করা যায়নি। ক্ষতিগ্রস্ত এসব কৃষকদের প্রণোদনা দিতে হবে।
জগন্নাথপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শওকত ওসমান মজুমদার বলেন, বন্যার কারণে বীজতলা তলিয়ে যাওয়ায় এবার উপজেলায় আউশ ধান চাষাবাদ করা সম্ভব হয়নি। ফলে ৩ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কোনো চাষাবাদ করা যায়নি। চাষাবাদ করা গেলে কমপক্ষে ১০ হাজার মেট্রিক টন ধান উত্তোলন করা যেত।