জগন্নাথপুরে বাবাকে গলা কেটে হত্যা, ছেলের স্বীকারোক্তি

বাবা সুরুজ আলীকে (৬৫) গলা কেটে হত্যা করেছেন তারই ছেলে সুজাত মিয়া (২৮)। গত সোমবার (৬ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের রানীগঞ্জ ইউনিয়নের গন্ধর্ব্বপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের হাতে মারধরের শিকার হওয়ায় এবং তালাকের হুমকি পেয়ে তাদের ফাঁসাতে গিয়ে সুজাত মিয়া এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

শনিবার (১১ জুন) সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন সুজাত মিয়া। জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে বৃদ্ধ বাবা সুরুজ আলী নিজ ঘরে ছোট ছেলে সুজাত মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ২টার দিকে সুজাত মিয়া ঘুমন্ত বাবাকে গলা কেটে হত্যা করেন। পরে পাশের বাড়ির লোকজনদের গিয়ে জানান, একদল ডাকাত তার বাবাকে হত্যা করেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠায়।

এ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে জগন্নাথপুর থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিকভাবে ৪ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ঘটনার পরদিন নিহতের মেয়ে খোদেজা বেগম অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ অনুসন্ধানে সন্দেহভাজন সুজাত মিয়াকে আটক করে গত বুধবার আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে। সুনামগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জাহান ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জগন্নাথপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামীম আল মামুন জানান, রিমান্ডে আনার পর থেকে আসামি একেকবার একেক কথা বলতে থাকেন। একপর্যায়ে গত শুক্রবার তিনি তার বাবাকে গলা কেটে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

এসআই শামীম আল মামুন আরও জানান, আসামির স্ত্রী বিগত এক বছর ধরে বিদেশে রয়েছেন। তিনি তার স্বামীর কাছে টাকা না পাঠিয়ে নিজের বাবার বাড়িতে টাকা পাঠানোকে কেন্দ্র করে সুজাত মিয়ার সঙ্গে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরোধ দেখা দেয়। শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে ফাঁসাতে সুজাত মিয়া তার বাবাকে গলা কেটে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন বলে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, পুলিশের কাছে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করার পর তাকে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা উদ্ধারসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়েছে। পরে শনিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে আসামিকে সুনামগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়।