জগন্নাথপুরে বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার আগেই বৃষ্টি, অস্বস্তিতে কৃষক

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ পুরোপুরি শেষ হয় নি। এর আগেই বৃষ্টি হওয়ায় শঙ্কায় আছেন কৃষকরা। ভারী বৃষ্টিপাত হলে ফসল ভেসে যাবার আশঙ্কায় অস্বস্তিতে আছেন কৃষক। আর পাউবোর দাবি মাত্র ৪ টি প্রকল্প ব্যতিত সব প্রকল্পের কাজই শেষ।

শনিবার (১৬ মার্চ) জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ সংস্কার তদারক কমিটির সভাপতি আল বশিরুল ইসলাম ও পাউবোর মাঠ কর্মকর্তা সবুজ কুমার শীল হাওর পরিদর্শন করে এমন তথ্য নিশ্চিত করে অসমাপ্ত কাজগুলো দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেন।

পাউবো সূত্র জানায়, জগন্নাথপুরে এবার ৩৩ টি প্রকল্পের মাধ্যমে চার কোটি টাকা ব্যয়ে ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার কাজ করা হচ্ছে। ৮ নম্বর প্রকল্পে সামান্য মাটির কাজ ও ১১, ১৪, ৩২ নম্বর প্রকল্পে ঘাসলাগানোসহ শেষ পর্যায়ে কাজ চলছে।

প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির লোকজনের অভিযোগ কাজ শেষ পর্যায়ে এলেও বিলের কিস্তি পাচ্ছেন না। নিয়ম অনুযায়ী এই সময়ে তিন কিস্তির টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও এখনো অনেকে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাননি।

৪ নম্বর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি রাশিদুল ইসলাম বলেন, আমার প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ। নিয়ম অনুযায়ী তৃতীয় কিস্তির টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু মাত্র এক কিস্তিতে ২৫ ভাগ টাকা পেয়েছি। প্রকল্পের বরাদ্দ ২০ লাখ টাকা। তিনি বলেন, ধারকর্জ করে বাঁধের কাজ শেষ করছি। টাকা না পেয়ে কষ্টে আছি। এদিকে কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টির দেখা পাওয়ায় বোরোধান চাষীদের মধ্যে স্বস্তি কাজ করলেও বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় অস্বস্তি রয়েছে।

কথা হয় কৃষকনেতা দাস নোওয়াগাঁও গ্রামের সুমন দাসের এর সঙ্গে। তিনি বলেন, দুই দফা মেয়াদবৃদ্ধির পরও হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় আমরা দুশ্চিন্তায় আছি। ঝড় বৃষ্টি ও অকাল বন্যার ঝুঁকিতে কৃষকরা চিন্তিত।

হাওর বাঁচাও আন্দোলন জগন্নাথপুর উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ২৮ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা। বর্ধিত ৭ মার্চের পরও কাজ শেষ না হওয়া চরম গাফিলতি, এটা মেনে নেয়া যায় না। এখনো অনেক প্রকল্পে পুরোপুরি কাজ শেষ না হওয়ায় কৃষকরা চিন্তিত।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী সবুজ কুমার শীল বলেন, চারটি প্রকল্পের আংশিক কাজ ব্যতিত অন্যসব প্রকল্পের কাজ শেষ। তিনি বলেন, বরাদ্দ প্রাপ্তি ও কাজের অগ্রগতি দেখে টাকা দেওয়া হচ্ছে। পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় এখনো সবাইকে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেয়া যায় নি।

জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধ নির্মাণ সংস্কার তদারক কমিটির সভাপতি আল বশিরুল ইসলাম শনিবার হাওর পরিদর্শন করে বলেন, জগন্নাথপুরে বাঁধের কাজ প্রায় শেষ। দুই তিন দিনের মধ্যে অসমাপ্ত সব কাজ শেষ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।