জগন্নাথপুরে বন্যায় খাদ্য সংকটে মারা গেছে অসংখ্য গবাদিপশু

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় স্মরণকালের বন্যায় গবাদিপশুর খাদ্যসংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। খাদ্যসংকটে পড়ে অনেকের গরু–ছাগল মারা গেছে। আবার বানের পানিতে অনেকের গবাদিপশু ভেসে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে বন্যাকবলিত মানুষ কম দামে তাঁদের গবাদিপশু বিক্রি করে দিচ্ছেন।

৬ জুন থেকে অব্যাহত বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জগন্নাথপুর উপজেলা বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় বন্যাকবলিত মানুষ প্রাণ বাঁচাতে আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে ওঠেন। তবে ওই সময় অনেকেই গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েন। উঁচু জায়গা খুঁজে গবাদিপশু নিয়ে রাখলেও খাদ্যসংকট তীব্র আকার ধারণ করে।

উপজেলার বেতাউকা গ্রামের কৃষক শিশু মিয়া বলেন, ‘আমার চারটা গরু কোনোরকমে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসতে পারলেও খাবারের অভাবে একটা মারা গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজন আমাদের জন্য খাবার নিয়ে আসেন। কিন্তু গরুর খাবার কেউ তো নিয়ে আসে না। পানি আর কচুরিপানা এনে গরুগুলাকে কোনরকমে রক্ষা করছি।’

মীরপুর ইউনিয়নের গড়গড়ি গ্রামের সুজন মিয়া বলেন, কয়েক দিন ধরে তিনি দুটি গরু বিক্রির চেষ্টা করছিলেন। তবে সবার বাড়িতেই পানি থাকায় কেউ গরু কিনতে চাচ্ছিলেন না। পরে আজ গরুর হাটে নিয়ে গরু দুটি ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। এতে তাঁর কমপক্ষে ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের আসামপুর গ্রামের বাসিন্দা দিনুল ইসলাম জানান, এক মাস আগে তাঁর গাভি একটা বাচ্চা দিয়েছে। বন্যার কারণে তিনি আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে আশ্রয় নিলেও গরু ও বাছুর রাখার মতো সেখানে জায়গা নেই। তাই আসামপুর গ্রামের সেতুর ওপর কয়েক দিন গরু রেখেছিলেন। পরে রসুলগঞ্জ বাজারে মাত্র সাড়ে তিন হাজার টাকায় তিনি বাছুরসহ গাভি বিক্রি করেছেন। স্বাভাবিক সময় হলে গাভিটি কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারতেন বলে জানান তিনি।

চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘খাদ্যসংকটে পড়ে আমার ইউনিয়নের অনেক গবাদিপশু মারা গেছে বলে খবর পেয়েছি। নলুয়ার হাওরের গরু–ছাগল মরে ভেসে যেতেও দেখা গেছে। মানুষ নিরুপায় হয়ে কম দামে গরু বিক্রি করে দিচ্ছে।’

পাটলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আংগুর বলেন, উপজেলার প্রধান পশুর হাট রসুলগঞ্জ বাজারে হাট বসেছিল। হাটে পানির দরে গবাদিপশু বিক্রি হতে দেখা গেছে। বন্যার কারণে খাদ্যসংকটে অনেক গৃহস্থ গবাদিপশু বিক্রি করে দিয়েছেন। ২০ হাজার টাকা দামের গরু এক ব্যক্তি ১০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।

জগন্নাথপুর গ্রামের দিলসুন্দর আলী বলেন- জিনিস পএের যে তার পাশা পাশি গবাদিপশুর ওষুধ চরা দাম।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, বন্যার কারণে গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। তবে সরকারিভাবে সাধ্যমতো গবাদিপশুর জন্য খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।