সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হতে আর মাত্র তিনদিন বাকি। অথচ এখনও সব প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি। এছাড়া শুরু হওয়া অধিকাংশ প্রকল্পের কাজে ধীরগতিতে কৃষকরা দুশ্চিন্তায় ভুগছেন।
এ অবস্থায় গতকাল শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী হাওর ঘুরে কাজের অগ্রগতি দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনদিনের মধ্যে কাজ শেষ করতে পিআইসির লোকজনকে নির্দেশ দিয়েছেন।
কৃষক ও পাউবো সূত্রে জানা যায়, জগন্নাথপুর উপজেলায় এবার ৪৭টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে। এসব কাজের জন্য ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। নিয়ম অনুযায়ী ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ২৪ ও ৩৩ নম্বর প্রকল্পের কাজ গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত শুরু হয়নি। অপর প্রকল্পগুলোর মধ্যে দুই-তিনটি ব্যতিত সব প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন জগন্নাথপুর উপজেলা কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নির্মল দাশ বলেন, হাওর ঘুরে কাজের যে গতি দেখলাম তাতে করে একটি প্রকল্পের কাজও নির্ধারিত সময়ে সঠিকভাবে শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হলে অকাল বন্যার ঝুঁকিতে পড়তে হয়। ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে বাঁধের কাজ করা যায় না।
সংগঠনের উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব অমিত দেব বলেন, নলুয়ার হাওরে পানি প্রবেশের পথ ২৪ নম্বর প্রকল্পের ইকড়ছই স্লুইচগেটের সামনের বাঁধ ও ৩৩ নম্বর প্রকল্পের গোপাইখালি ভাঙনে কাজ শুরু না হওয়া দুঃখজনক। কাজ শেষ হতে আর তিনদিন বাকি, কিন্তু এখনও কার্যাদেশ পায়নি পিআইসি। এ ব্যর্থতা উপজেলা ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার বাস্তবায়ন কমিটি এড়াতে পারে না।
৩৩ নম্বর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মিলাদ মিয়া বলেন, আমি এখনও কার্যাদেশ পাইনি। আমাকে গত বৃহস্পতিবার মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে কাজ করার জন্য। কত টাকার কাজ, কতটুকু কাজ, কিছুই জানি না।
একই কথা জানান ২৪ নম্বর প্রকল্পের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হাসান গাজী বলেন, ২৪ ও ৩৩ নম্বর প্রকল্পের কাজ শুরু করতে বলা হয়েছে। কার্যাদেশ দেওয়া হবে। অন্য প্রকল্পের কাজ জোরেশোরে চলছে। শুক্রবার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাওর ঘুরে পিছিয়ে পড়া পিআইসির লোকজনকে তিনদিনের মধ্যে কাজ শেষ করতে নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার বাস্তবায়ন উপজেলা কমিটির সভাপতি ইউএনও সাজেদুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।